বুয়েটের ২৪ শিক্ষার্থীসহ ৩২ জন কারামুক্ত
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সুনামগঞ্জে টাঙ্গুয়ার হাওড়ে ঘুরতে গিয়ে গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২৪ শিক্ষার্থীসহ ৩২ শিক্ষার্থী কারামুক্ত হয়েছেন। কারাগারের বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা মুক্তি পান। তবে এ সময় কোনো শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। কারা ফটকের সামনে পূর্ব থেকে প্রস্তুত রাখা বাসে উঠে তারা ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেন।
বিকাল থেকেই শিক্ষার্থীদের মুক্তির অপেক্ষায় কারাফটকে অবস্থান নেন স্বজনরা। সেখানে বুয়েট শিক্ষার্থী সাবিক শাহরিয়ারের পিতা জামাল উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকের বলেন, ‘মাননীয় আদালত আমাদের সন্তানদের জামিন দিয়েছেন এজন্য আমরা খুশি। আমরা আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই। এই মামলা দিয়ে যেন আর কোনো হয়রানি করা না হয়। মামলাটা যেন খারিজ হয়ে যায় এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সন্তানদের ব্যবহৃত ডিভাইসগুলো এখনো পাইনি। আশা করছি পেয়ে যাব। আমাদের সন্তানদের সঙ্গে এখনো ভালো করে কথা বলতে পারিনি কাজেই এর থেকে বেশি কিছু বলার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, এখানকার সংবাদকর্মী ভাইয়েরা আমাদের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন, নিরপেক্ষভাবে লেখালেখি করেছেন এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। এর আগে দুপুর ১টার দিকে সুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ফারহান সাদিকের আদালতে ৩৪ জনের জামিন আবেদনের শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক ৩২ জনের জামিন মঞ্জুর করেন। অন্য দুজন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের জামিন আবেদনের নথি শিশু আদালতে পাঠানোর কথা বলেন আদালতের বিচারক।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তৈয়বুর রহমান বাবুল যুগান্তরকে বলেন, আসামিরা মেধাবী শিক্ষার্থী। হাওড়ে ঘুরতে আসায় তাদের পুলিশ শুধু সন্দেহের বশে গ্রেফতার করে। কিন্তু এসব শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ পুলিশ নষ্ট করতে পারে না। তাই আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেছেন। তিনি আরও বলেন, গ্রেফতার অন্য দুজন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের জামিন আবেদন শিশু আদালতে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। সেখানেও ন্যায়বিচার পাব।
জামিন-পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় বুয়েট শিক্ষার্থী সাদ আদনান অপির বাবা আবদুল কাইয়ুম বলেন, সন্তানদের জামিন হওয়ায় আমরা খুশি। আমরা চাই-মামলা থেকেও তাদের দ্রুত রেহাই দেওয়া হোক। শিক্ষার্থী আবদুল বারির বাবা মতিউর রহমান বলেন, আমাদের ছেলেরা হাওড়ে ঘুরতে এসেছিল। তারা কোনো অপরাধ করেনি। জামিন দেওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট।
রোববার সকালে তাহিরপুর উপজেলা বাজারের ঘাট থেকে একটি নৌকা নিয়ে বুয়েটের ২৪ শিক্ষার্থীসহ ৩৪ শিক্ষার্থী টাঙ্গুয়ার হাওড়ে ঘুরতে যান। ট্যাকেরঘাট পর্যটন এলাকায় যাওয়ার পথে দুপুরের দিকে পাটলাই নদীতে পুলিশের দুটি স্পিডবোট নৌকার গতিরোধ করে। এরপর শিক্ষার্থীদের আটক করে থানায় নেওয়া হয়। পরদিন সোমবার তাহিরপুর থানার এসআই রাশেদুল কবির বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন। জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত এবং গোপনে মিটিং করতে তারা হাওড়ে এসেছিল বলে পুলিশ দাবি করে।