Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

একান্ত সাক্ষাৎকারে শিল্প প্রতিমন্ত্রী

মন্ত্রীদের ভেতর একটা সিন্ডিকেট আছে

Icon

মাহবুব আলম লাবলু

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মন্ত্রীদের ভেতর একটা সিন্ডিকেট আছে

ফাইল ছবি

শেয়ার কেলেঙ্কারিতে জড়িতরা এখন মন্ত্রী, দুঃখ হয় সবাই টাকার পিছে ঘুরছে * সব কথা বলতে গেলে দেখবেন আমার লাশটা রাস্তায় পড়ে আছে

সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, দুর্নীতি-লুটপাট, অর্থনৈতিক দুরবস্থা, খেলাপি ঋণসহ স্পর্শকাতর নানা বিষয়ে যুগান্তরের সঙ্গে খোলামেলা আলাপ করেছেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। রোববার সন্ধ্যায় মিরপুরে নিজ কার্যালয়ে তার সঙ্গে একান্তে কথা বলেছেন যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি মাহবুব আলম লাবলু। সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো-

যুগান্তর : কেমন আছেন?

প্রতিমন্ত্রী : আলহামদুলিল্লাহ। ভালো আছি।

যুগান্তর : প্রতিমন্ত্রী হিসাবে আপনি কি আপনার কাজ করতে পারছেন? আপনার কাজে কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে কি?

প্রতিমন্ত্রী : আমাদের মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৯টি সংস্থা আছে। কোনো সংস্থায় চেয়ারম্যান হেড। কোনো সংস্থায় ডিজি হেড। এখানে যে আইন আছে সে অনুযায়ী সংস্থার হেডরাই সব ক্ষমতার অধিকারী। মিনিস্টার হিসাবে একটা পিওনের চাকরি দেওয়ারও ক্ষমতা নেই আমার। আর চেয়ারম্যান ইচ্ছা করলে এক দিনে ১০ জনকে নিয়োগ দিতে পারে। মন্ত্রী কাউকে চাকরি দিতে চাইলে চেয়ারম্যানকে বলতে হয়। এই আইনগুলোর পরিবর্তন করতে হবে। আইনের পরিবর্তন না হলে তাদের স্বেচ্ছাচারিতা, লুটপাট দমানো যাবে না। তারা আমার কথা না শুনলে কিছু করার নেই। সব ক্ষমতা চেয়ারম্যানদের। ৫০ কোটি টাকার বেশি কাজ হলে সেটা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হয়। মন্ত্রীদের অনুমতি নিতে হয়। এখন তারা এটাকে ভেঙে ভেঙে টেন্ডার করে। তাহলে আর আমাদের কাছে আসতে হবে না। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নেই।

যুগান্তর : স্বচ্ছতা-জবাবহিদিতা নিশ্চিত করতে আপনাদের তরফ থেকে আইন সংশোধনের কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন কিনা?

প্রতিমন্ত্রী : এটি আমি একাধিকবার বলেছি। যেমন-আমাদের সুগার মিলগুলো লুজিং কনসার্ন। আমরা লোকসান দিচ্ছি। অথচ সুগার মিলগুলো লোকসান হওয়ার কথা নয়। ওখানে যারা কৃষক তারাই শ্রমিক। যা ইচ্ছা তাই করছে। যেখানে কর্মকর্তা-কর্মচারী লাগার কথা না সেখানে লোক নেওয়া হয়েছে। ছয় মাস আখের মৌসুম। বাকি সময় কাজ না থাকলেও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, ওভারটাইম দিতে হচ্ছে। এমন পদ আছে যার নাম ‘কানামনা’। এদের কাজ হচ্ছে ঘুরেফিরে খাওয়া। যেখানে ১০ জন লোক দরকার সেখানে লোক আছে ১০০। অনেক কঠোর সিদ্ধান্ত আমি নিয়েছি। এর আগে সুগার মিলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন একজন। সে যদি আর কিছু দিন থাকত তাহলে মিলের যন্ত্রপাতি, লোহালক্কড়সহ বিক্রি করে দিত। অনেক জায়গা থেকে টেলিফোন আসার পরও আমি তাকে সরিয়েছি। দীর্ঘ দিন ধরে জমতে জমতে সুগার মিলের একটা বড় অঙ্কের ঋণ হয়ে গেছে। আমি অর্থমন্ত্রীকে বলেছি, আপনারা এত ঋণ মওকুফ করে দিচ্ছেন। সুগার মিলের ঋণটা মওকুফ করেন না কেন। এটা মওকুফ করে দেন দেখেন সুগার মিলের লাভ হয় না লস হয়।

যুগান্তর : সিন্ডিকেটের প্রভাবেই কি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হচ্ছে?

প্রতিমন্ত্রী : আমাদের একটি ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠানের বিদেশি শেয়ারহোল্ডাররা চলে যাবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম নিজেরা এই শেয়ার রাখব। হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়ে গেল। জার্মানির অংশটা কিনে নিল স্থানীয় একটি ওষুধ কোম্পানির মালিক। আমাদের আর দিল না। পরে তিনি পুরোটাই দাবি করে বসেন। আমার মন্ত্রী-সচিব পর্যন্ত তার পক্ষে নোট দিয়েছে। আমার কাছে ফাইল আসার পরে আমি উলটো নোট দিয়েছি। আমি বলেছি, এটা দেওয়া যাবে না। বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এটা সরকারের কাছে থাকতে হবে। মন্ত্রী আমাকে ওই ব্যবসায়ীর পক্ষে লিখতে বললেন। কিন্তু আমি শুনিনি। পরে আমার নোট অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন। আমাদের অনেক সংস্থা আছে-আমার কাছে কোনো ফাইল আসে না। শুধু ছোটাছুটির ফাইল আমার কাছে পাঠায়।

যুগান্তর : আপনার টেবিলে ফাইল না আসাটা কি নিয়মের ব্যত্যয় নয়?

প্রতিমন্ত্রী : আসে না। কী বলব। সচিবের কাছ থেকে মন্ত্রীর কাছে ফাইল চলে যায়। আমার কাছে ফাইল আসে না, কারণ কয়েকটি ফাইলে আমি উলটো নোট দিয়েছি। আমি নেত্রীকে সব জানিয়েছি।

যুগান্তর : এটা অনিয়ম নয় কি?

প্রতিমন্ত্রী : অনিয়ম তো করছে। রেগুলার অনিয়ম করছে। আমাদের ১৩টি বাফার গোডাউন। ৫-৬ বছরেও কমপ্লিট করতে পারেনি। আমলাদের কারণে এগুলো হচ্ছে না। আমি যখন কৃষি মন্ত্রণালয়ে যৌথ মিটিংয়ে বললাম সারের সিন্ডিকেট আছে। পোটন তখন দাঁড়িয়ে বলল, আপনি সব সময় সিন্ডিকেটের কথা বলেন। আমাদের কোনো সিন্ডিকেট নেই। আমার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে বললে আমি বললাম, আমি যেটা বলেছি, জেনে বলেছি। প্রত্যাহার করে নিতে আমি বক্তব্য দেইনি। পরে তো সিন্ডিকেট ধরা পড়েছে। পোটন এখন পালিয়েছে। চট্টগ্রামের একজন আছে তিনিও পালিয়েছে।

যুগান্তর : পণ্যমূল্য সামাল দিতে না পারার দায় নিয়ে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়া উচিত বলে আপনি মন্তব্য করেছেন। দেশে কি ব্যর্থতার দায়ে মন্ত্রীদের পদত্যাগের নজির আছে?

প্রতিমন্ত্রী : না, বাংলাদেশে এ ধরনের নজির নেই। এটা ভারত, ব্রিটেন, আমেরিকায় আছে। এসব দেশে ব্যর্থ মন্ত্রীরা আপসে চলে যান।

যুগান্তর : পণ্যমূল্য সামাল দেওয়া তো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ। মন্ত্রণালয় তাহলে কী করছে। মন্ত্রণালয় কি সরকার ও জনগণকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে?

প্রতিমন্ত্রী : এটা বাণিজ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করুন। তার নিজেরই তো ব্যবসা আছে। তারপর খাদ্যমন্ত্রীর আছে। খাদ্যমন্ত্রী নিজেই চাল মিলের মালিক। আড়তের মালিক।

যুগান্তর : এখান থেকে বের হওয়ার পথ কী, আপনি মন্ত্রী হিসাবে কী মনে করেন?

প্রতিমন্ত্রী : আমার মনে হয় মন্ত্রী পরিবর্তন করা উচিত। আর স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল করা উচিত। যাদের গোডাউনে হাজার হাজার বস্তা চাল, চিনি পাওয়া যায় তাদের ধরবে। তাদের ছাড় দেবে না। করপোরেট ছয়টা কোম্পানি এখন মুড়ি, চানাচুর পর্যন্ত বিক্রি করে। বঙ্গবন্ধু বলেছেন, একটি লোক রকেটের গতিতে বড়লোক হচ্ছে তার গতি কমিয়ে দাও। যে পিপিলিকার গতিতে চলছে তার গতি বাড়াও। বঙ্গবন্ধুর এই উক্তি ধারণ করে নেত্রী এসএমই ফাউন্ডেশন করেছেন। এসএমই টাকা বরাদ্দ দেওয়ার পরও ব্যাংকগুলো ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তাদের টাকা দিতে রাজি হয় না।

যুগান্তর : আপনি বলেছেন অর্থনীতি ও বাজার-দুই জায়গাতেই সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। এই সিন্ডিকেট কারা তৈরি করেছে, সিন্ডিকেট তৈরির সুযোগ দিয়েছে কারা?

প্রতিমন্ত্রী : খামাখা নামটাম জিজ্ঞাসা করে আমাকে ভেজালে ফেলবেন। শেয়ার কেলেঙ্কারিতে কারা ছিল? তাদের অনেকেই এখন মন্ত্রী। মন্ত্রীদের ভেতর একটা সিন্ডিকেট আছে।

যুগান্তর : এরা আসলে কারও লোক, নাকি ব্যবসায়ী? আওয়ামী লীগের বিপদে গুলির সামনে আপনি হয়তো বুক পেতে দেবেন। এদের কি তখন পাশে পাওয়া যাবে?

প্রতিমন্ত্রী : কাশিমপুর কারাগারে আমিসহ আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা একসঙ্গে ছিলাম। বললে তো এখন সমস্যা। এদের মধ্যে দুজন ঘুমে যাওয়ার আগে নেত্রীকে এক গালি, ঘুম থেকে উঠে আরেক গালি দিত। আজকে তারা কোথায়, আমরা কোথায়।

যুগান্তর : আপনি বলেছেন, দেশে চাল, ডাল, চিনি, তরকারি কোনো কিছুর অভাব নেই। কিন্তু বাজারে গেলে মানুষ কাঁদছে। সিন্ডিকেট সব লুটে নিচ্ছে। এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কে নেবে? নাকি সিন্ডিকেটে যারা আছে তারা রাষ্ট্রযন্ত্রের চেয়েও শক্তিশালী?

প্রতিমন্ত্রী : এগুলোর ব্যাপারে নেত্রীর নির্দেশ ‘জিরো টলারেন্স’। মনে করেন আমি বাণিজ্যমন্ত্রী। এগুলো তো আমার ধরা উচিত। আমি কি ধরছি? মন্ত্রীত্ব চালানো এত সোজা কথা নয়।

যুগান্তর : সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারলে এই কালিমাতো আপনাদের গায়েই লাগবে, তাই না?

প্রতিমন্ত্রী : ওই যে কালকে ওবায়দুল কাদের সাহেব বলছে, মন্ত্রী হয়ে আপনি (শিল্প প্রতিমন্ত্রী) নিজেই তো সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেন না। আপনি সিন্ডিকেট নিয়ে কথা বলেন কেন? সব কথা বলা যায় না। এখন আমার মন্ত্রণালয়ের সিন্ডিকেট ভাঙতে আমাকে তো দায়িত্ব দেয়নি। প্রতিমন্ত্রী হিসাবে আমার কোনো পাওয়ার নেই। মন্ত্রী হলো মন্ত্রণালয়ের ‘অল ইন অল’ সচিব আর মন্ত্রী। আমিতো মাঝখানে বসে আছি এমনিতেই। তার পরও সত্যটা বলার চেষ্টা করি। কিন্তু বলতে গেলেই থামিয়ে দেওয়া হয়। দুঃখ হয়, সবাই টাকার পিছে ঘুরছে। কোনো অভাব নেই আমাদের দেশে।

যুগান্তর : আপনি বলেছেন, যারা একসময় খালি ব্রিফকেস নিয়ে ঘুরত তারা এখন ব্যাংকের মালিক। তারা কারা এবং সংখ্যায় কেমন হবে?

প্রতিমন্ত্রী : এদের সংখ্যা একেবারে কম নয়। আপনি খবর নিলেই পাবেন। ঢাকা শহরে আমার রাজনৈতিক বয়স ৫০ বছর। কে কোথা থেকে উঠে এসেছে সব কিছু জানি। আর কিছু বলব না। এমনিতেই আমলারা আমার পেছনে লেগেছে। তারা নেত্রীকে আমার সম্পর্কে নানা কথা বলছে। আমি যদি সব কথা বলতে যাই, দেখবেন আমার লাশটা রাস্তায় পড়ে আছে।

যুগান্তর : বাজারে ডলার কিনতে গেলে পাওয়া যায়। তাহলে সংকট কেন?

প্রতিমন্ত্রী : আমাদের ডলার সংকট হওয়ার কথা নয়। বাংলাদেশের এক কোটির বেশি লোক বিদেশে চাকরি করে। তারা যদি অফিশিয়ালি রেমিট্যান্স পাঠায় তাহলে দেশে কি ডলার সংকট হওয়ার কথা? সিন্ডিকেট ডলার কিনে রেখেছে। এখন এগুলো আস্তে আস্তে বিক্রি করছে। নেত্রীর নেতৃত্বে যেভাবে দেশ চলছে তাতে দেশে কোনো অভাব নেই। আমরা যদি শুধু সিন্ডিকেট নির্মূল করতে পারি... বাংলাদেশের বড় সমস্যা হচ্ছে সিন্ডিকেট। আমরা প্রত্যেকে টাকার পেছনে ঘুরছি। মসজিদে মাওলানা সাহেবরা বয়ান করেন তাদের সুবিধামতো। আমি তাদের বলছি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ভেজাল, কারসাজি, সিন্ডিকেট এগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলেন না কেন? এগুলো তো কুরআনের কথা। আমার কথা নয়। আপনারা বয়ানের আগে এ কথাগুলো বললে তো মানুষের ভেতর ভয় থাকত।

যুগান্তর : এ অবস্থা থেকে বের হওয়ার কি কোনো পথ নেই?

প্রতিমন্ত্রী : আইনের প্রতি সবাইকে শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। দেশপ্রেম থাকতে হবে। আমার ভেতরে দেশপ্রেম থাকলে আমি দুর্নীতি করব না। আমাদের তো দেশপ্রেমই নেই। সবার টাকা দরকার। যার আছে তার আরও বেশি দরকার। আমরা যদি জাকাতের টাকা ঠিকমতো বণ্টন করি তাহলে আমাদের দেশের ভূমিহীন, গরিব কৃষকদের স্বাবলম্বী করে দেওয়া যায়। এসএমই ফাউন্ডেশনের ৭২ লাখ সদস্য আছে। এক লাখ টাকায় এখন চিড়া, মুড়ির ব্যবসাও করা যায় না। আমরা এক লাখ টাকাও তাদের ঋণ দিতে পারি না। এসএমইর কোনো বাজেট নেই। বাজেটের টাকা কোথায় খরচ করছে। যারা হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে রাখছে তাদের শত শত কোটি টাকা ঋণ মওকুফ করে দিচ্ছে। কী কারণে তাদের ঋণ মওকুফ করে দেবে। তাদের দেশের প্রতি কী কন্ট্রিবিউশন আছে। তারা প্রতি বছর ঋণ নিচ্ছে, প্রতি বছর ঋণ পুনঃতফশিল করছে। আইন থাকা উচিত-ঋণ পুনঃতফশিল করা যাবে না। ঋণখেলাপিরা কোনো সুযোগ সুবিধা পাবে না। ট্যাক্স খেলাপিরা কোনো সুযোগ সুবিধা পাবে না।

যুগান্তর : আপনার মন্ত্রণালয়েও অনেক দুর্নীতির কথা শোনা যায়। দুর্নীতির ফলে ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শেষ হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে কী বলবেন?

প্রতিমন্ত্রী : বিসিকের বর্তমান চেয়ারম্যান আসার পরে বিসিকের গতি হয়ে গেছে কচ্ছপগতি। সচিবকে এ পর্যন্ত অন্তত ১০ বার বলেছি, তাকে সরিয়ে একজন ভালো, ডায়নামিক অফিসার নিয়ে আসেন। কারণ বিসিকের কাজই হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় শিল্প পার্ক করে ক্ষুদ্র মাঝারি ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠিত করা। নেত্রী বারবার বলছেন, চাকরির পেছনে না ঘুরে উদ্যোক্তা হতে। উদ্যোক্তা সৃষ্টির কাজ হচ্ছে বিসিকের। সেই বিসিকে একজন অপদার্থ, অথর্ব চেয়ারম্যান হিসাবে আসছে। কে সরাবে তাকে। আমাদের ৭৮ জন পিডি আছে। সে প্রত্যেককে ৪-৫ বার করে শোকজ করেছে। তার এটা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই। সব পিডি কি খারাপ। কেন আমাদের প্রকল্পগুলো হচ্ছে না। কেমিক্যাল পল্লির কাজ আটকে আছে। কোনো জায়গায় আগুন লাগলেই আমাদের ওপর দায় বর্তায়। কেমিক্যাল পল্লি হয়ে গেছে। এগুলো ডিসির কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে না কেন? আটকে রাখা হয়েছে কেন? মুন্সীগঞ্জ কেমিক্যাল পল্লির টেন্ডার আটকে রাখা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসা করেন। এরপর সারের সিন্ডিকেট, তেজগাঁও ব্লেড ফ্যাক্টরি, গাড়ি তৈরির কারখানা প্রগতি-সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। আপনারা খোঁজ নেন অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে।

যুগান্তর : একজন আইনপ্রণেতা ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসাবে আপনি কি সংসদে কিংবা আপনাদের দলীয় ফোরামে এসব কথা তুলেছেন?

প্রতিমন্ত্রী : আমি ব্যক্তিগতভাবে নেত্রীকে বলেছি। তিনি অনেকের ওপর অ্যানোয়েড।

যুগান্তর : আপনি নিজেই বলেছেন, কাজ করতে না পারলে যেকোনো মন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়া উচিত। আপনি এটাও বলেছেন, আপনার মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী-সচিবই সব, আপনি মাঝখানে শুধু বসে আছেন। তাহলে আপনার মাথায় দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়া কোনো চিন্তা কাজ করে কিনা?

প্রতিমন্ত্রী : চিন্তা কাজ করে। কিন্তু সমস্যা আছে। নেত্রী আমাকে খুব স্নেহ করেন। এখন আমি যদি রিজাইন করি নেত্রী সিরিয়াসলি মাইন্ড করবেন। নেত্রী আমার বড় বোন। তিনি আমাকে একটা সম্মান দিয়েছেন। আমি টাইম টু টাইম নেত্রীকে সব জানিয়ে আসছি। আমার মন্ত্রণালয়ের সব জিনিস নেত্রীর নখদর্পণে।

যুগান্তর : সংসদ-সদস্য হিসাবে আপনি এলাকার মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারছেন এবং এখানে আপনি সন্তুষ্ট কিনা?

প্রতিমন্ত্রী : এলাকার মানুষের জন্য আমি যা করতে পারছি বা করছি তাতে আমি অত্যন্ত সন্তুষ্ট। আমার এলাকার মানুষও খুশি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম