Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের দুঃসংবাদ

সেকেন্ডারিতে বিনিয়োগে কর ছাড় থাকছে না

বাজেট ২০২৩-২৪

Icon

সাদ্দাম হোসেন ইমরান

প্রকাশ: ১১ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সেকেন্ডারিতে বিনিয়োগে কর ছাড় থাকছে না

আগামী বাজেট শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য দুঃসংবাদ বয়ে আনছে। সেকেন্ডারি শেয়ারে বিনিয়োগে কর রেয়াত সুবিধা বাতিল করা হচ্ছে। রেয়াত পাওয়া যাবে শুধু প্রাইমারি শেয়ারে (আইপিও) বিনিয়োগে।

তবে সুখবর হলো-ব্যাংকের ডিপোজিট পেনশন স্কিমে (ডিপিএস) বিনিয়োগ সীমা বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে বছরে ৬০ হাজার টাকা (মাসিক ৫ হাজার টাকা) ডিপিএস পর্যন্ত কর রেয়াত পাওয়া যায়। এটি বাড়িয়ে ৭২-৭৫ হাজার টাকা করা হতে পারে। ব্যাংকে সঞ্চয়ে উৎসাহিত করতে এ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া রাজস্ব আদায় বাড়াতে বিদেশ ভ্রমণে বিমান টিকিটের ওপর কর বাড়ানো হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

যেসব খাতে বর্তমানে বিনিয়োগ করলে কর ছাড় পাওয়া যায়, সেগুলো হচ্ছে-সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ, জীবন বিমার প্রিমিয়াম; সরকারি কর্মকর্তার প্রভিডেন্ট ফান্ডে চাঁদা; স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিলে নিয়োগকর্তা ও কর্মকর্তার চাঁদা; কল্যাণ তহবিল ও গোষ্ঠী বিমা তহবিলে চাঁদা; সুপার এনুয়েশন ফান্ডে প্রদত্ত চাঁদা; সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে বছরে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা ডিপোজিট পেনশন স্কিম; স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার, স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড বা ডিভেঞ্চারে বিনিয়োগ এবং সরকার অনুমোদিত ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ।

একজন করদাতার বছরে মোট আয়ের ২০ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ বা দানকে কর রেয়াতযোগ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এর বেশি বিনিয়োগ বা দান করলে অতিরিক্ত অংশের কর রেয়াত পাওয়া যায় না। অনুমোদনযোগ্য বিনিয়োগের ১৫ শতাংশ হারে কর রেয়াত পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, একজন ব্যক্তি বছরে মোট ৮ লাখ টাকা আয় করেন। এ টাকা থেকে তিনি ২ লাখ টাকা সেকেন্ডারি শেয়ারে বিনিয়োগ করলেন। যেহেতু ২০ শতাংশ বিনিয়োগ কর রেয়াতযোগ্য তাই এক লাখ ৬০ হাজার টাকার ওপর তিনি কর রেয়াত পাবেন, বাকি ৪০ হাজার টাকার জন্য তিনি রেয়াত পাবেন না। এক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি ১৫ শতাংশ হারে ২৪ হাজার টাকা কর রেয়াত পাবেন। অবশ্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা না দিলে কর রেয়াত ১৫ শতাংশের পরিবর্তে সাড়ে ৭ শতাংশ পাবেন তিনি।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, আগামী বাজেটে শেয়ারবাজারে সেকেন্ডারি শেয়ারে বিনিয়োগে কর রেয়াত সুবিধা থাকছে না। কারণ সেকেন্ডারি শেয়ারে বিনিয়োগ সঠিকভাবে পরিবীক্ষণ ও পরিগণনা করা কঠিন। তাই শুধু প্রাইমারি শেয়ারে বিনিয়োগজনতি কর রেয়াত সুবিধা অব্যাহত রাখা হচ্ছে।

জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ ও শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ বুধবার যুগান্তরকে বলেন, শেয়ারবাজারের ব্যাপারে সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত অন্যায় এবং অযৌক্তিক। কোনোমতেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, এর ফলে শেয়ারবাজার থেকে মানুষ সঞ্চয়পত্রে চলে যাবে। এতে একদিকে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, অপরদিকে সরকারকে সঞ্চয়পত্রে আরও বেশি সুদ পরিশোধ করতে হবে। সামগ্রিকভাবে সরকারের দায় বাড়বে এবং বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি আরও বলেন, হঠাৎ করে কেন এই সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে, তা আমার বুঝে আসে না। এক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কী ব্যাখ্যা দিচ্ছে? অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, এর আগে যখন এই কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হয়েছিল, তখন নীতিনির্ধারকরা এটি ভাবেননি কেন? তার মতে, এনবিআর যাতে এই সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকে, সেজন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

ভ্রমণ কর বাড়ছে : কর আদায় বাড়াতে ভ্রমণ কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু বিদেশগামী যাত্রীদের ভ্রমণ কর বাড়ানো হবে। বর্তমানে স্থলপথে যে কোনো দেশ ভ্রমণের জন্য ৫০০ টাকা এবং জলপথে ভ্রমণে ৮০০ টাকা কর বহাল রয়েছে। আকাশপথে সার্কভুক্ত দেশ ভ্রমণে এক হাজার ২০০ টাকা; উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, চীন, জাপান, হংকং, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস, কম্বোডিয়া ও তাইওয়ান ভ্রমণে যাত্রীপ্রতি ৮ হাজার টাকা এবং অন্যান্য দেশ ভ্রমণের জন্য ৩ হাজার টাকা করে ভ্রমণ কর দিতে হয়। সাধারণত বিমান টিকিটের সঙ্গে এ কর আদায় করে থাকে এয়ার লাইন্সগুলো। অবশ্য ৫ বছরের বেশি থেকে ১২ বছর বয়সি শিশুদের জন্য নির্ধারিত হারের অর্ধেক ভ্রমণ কর দিতে হয়। ৫ বছর বা তার কম বয়সি যাত্রী, ক্যানসার আক্রান্ত রোগী, অন্ধ ব্যক্তি, বাংলাদেশি ও বিদেশি কূটনীতিক, তাদের পরিবার, বিমান ক্রু, বিমানকর্মী, হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের ভ্রমণ কর দিতে হয় না।

আগামী বাজেটে স্থলপথে ভ্রমণ করে এক হাজার টাকা, সার্কভুক্ত দেশের জন্য এক হাজার ৫০০ টাকা, ইউরোপ-আমেরিকা অঞ্চলের জন্য সাড়ে ৪ হাজার টাকা এবং অন্য অঞ্চলের জন্য সাড়ে ৩ হাজার টাকা করা হতে পারে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম