বিতর্কের মধ্যেই এলো আদানির বিদ্যুৎ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বিতর্কের মধ্যেই আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু। ফাইল ছবি
অবশেষে বহুল আলোচিত আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৮ মিনিটে বাংলাদেশের গ্রিডের সঙ্গে আদানির বিদ্যুৎ সংযুক্ত হয়। প্রাথমিকভাবে ২৫ মেগাওয়াট সরবরাহ করছে আদানি। দুটি ইউনিটের কেন্দ্রের ক্ষমতা ১৪৯৮ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ৭৫০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র উৎপাদনে এসেছে। অন্য ইউনিটটি এ বছরেই আসার কথা।
এদিকে আদানির বিদ্যুৎ নিয়ে আগামী ১৩ মার্চ বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল ভারতে যাবে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে। এর মধ্যেই আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। কেন্দ্রটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল ২৬ মার্চ।
পিজিসিবির মুখপাত্র এবিএম বদরুদ্দোজা সুমন বলেন, সন্ধ্যা থেকে আদানির বিদ্যুৎ বাংলাদেশের গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ২৫ মেগাওয়াট আসছে, পর্যায়ক্রমে এটি বাড়বে।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি (পিজিসিবি) সূত্র বলছে, আদানির বিদ্যুৎ সঞ্চালন করার জন্য ভারত এবং বাংলাদেশ প্রান্তে যে গ্রিড লাইন রয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অংশের কাজ শেষ করেছে পিজিসিবি। পিজিসিবির তরফ থেকে পিডিবিকে আনুষ্ঠানিকভাবে লাইনটি বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলে জানানো হয়। আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যব হৃত কয়লার দাম, বিদ্যুতের সঞ্চালনসহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে আগামী ১৩ মার্চ ভারত যাবেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা। আদানির কেন্দ্রটি ভারতের ঝাড়খন্ডের কোড্ডা জেলায়। সেখান থেকে সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ আসবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোহানপুরে, সেখান থেকে যাবে বগুড়াতে।
ঝাড়খন্ডের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে সরবরাহের জন্য মোট ২৪৪ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে ভারতে ১০৮ কিলোমিটার এবং বাংলাদেশে ১৩৬ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন রয়েছে।
আদানির কেন্দ্রটি দুটি ইউনিটে মোট ১৪৯৮ মেগাওয়াটের। এর মধ্যে ৭৫০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র চালু হওয়ার পথে। দ্বিতীয় কেন্দ্রটি পরে আসবে।
বাণিজ্যকভাবে চালু হওয়ার পর ৭২ ঘণ্টা একনাগাড়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু রাখতে হবে। এর পরে ঠিক হবে কেন্দ্রটির স্থাপিত ক্ষমতা। সে অনুযায়ী কেন্দ্রটি ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পাবে।
গত মাসে দেওয়া প্রতিটন কয়লার দাম ৪০০ ডলার অনুযায়ী প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়বে ২৫ টাকার বেশি। এর মধ্যে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া রয়েছে পাঁচ টাকা ১১ পয়সা। বাংলাদেশে কোনো বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে এত অধিক পরিমাণ কেন্দ্র ভাড়া দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া আদানিকে কয়লার সিস্টেম লসসহ বেশ কিছু সুবিধা দেওয়া হয়েছে যা আর কাউকে দেওয়া হয়নি।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দীন এ তথ্য নিশ্চিত করে যুগান্তরকে বলেন, ভারতের ঝাড়খন্ডের আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১ বাংলাদেশ গ্রিডের সঙ্গে সিনক্রোনাইজ করে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য পিজিসিবি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তবর্তী মনাকষা থেকে রহনপুর হয়ে বগুড়া পর্যন্ত ১৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন এবং বগুড়ায় ৪০০/২৩০ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র নির্মাণ করেছে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় নবনির্মিত লাইন ও গ্রিড উপকেন্দ্রের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের পরিমাণ কমবেশি ৫০ মেগাওয়াট।