Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

২ যুগে যুগান্তর

তিন গুণীকে সম্মাননা দিল যুগান্তর

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

তিন গুণীকে সম্মাননা দিল যুগান্তর

যুগান্তরের দেওয়া সম্মাননাপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম (বাঁ থেকে তৃতীয়), কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌসী রহমান (সর্ব বাঁয়ে) ও সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক আকরাম খানের (সর্ব ডানে) সঙ্গে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, যুগান্তর প্রকাশক সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপিসহ অন্যরা -যুগান্তর

দেশের তিন গুণীকে সম্মাননা দিয়েছে দৈনিক যুগান্তর। তারা হলেন-অর্থনীতিতে বিশেষ অবদানের জন্য সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য কালজয়ী কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌসী রহমান এবং ক্রীড়া খাতে ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফিজয়ী বাংলাদেশ অধিনায়ক আকরাম খান।

পত্রিকাটির দুই যুগে পদার্পণ উপলক্ষ্যে বুধবার যমুনা ফিউচার পার্কে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন।

পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে ক্রেস্ট এবং এক লাখ টাকার চেক। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান, যুগান্তরের প্রকাশক, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি এবং যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশের এই গুণীদের সম্মাননা জানাতে পেরে যুগান্তর পরিবার গর্বিত। আগামী দিনেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।

সম্মাননা পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মির্জ্জা আজিজ বলেন, দুই যুগে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে যুগান্তর এই পর্যন্ত এসেছে। পত্রিকাটির স্লোগান সত্যের সন্ধানে নির্ভীক। আমি আশা করব, আগামী দিনেও এই স্লোগানকে সামনে রেখে পত্রিকাটি এগিয়ে যাবে। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির কথা বলবে এবং পিছিয়ে পড়া মানুষের কথা বলবে।

ফেরদৌসী রহমান বলেন, ২৪ বছরের যাত্রাপথে বহু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে দৈনিক যুগান্তর। মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, শিল্প-সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করতে ভূমিকা রেখেছে। আগামী দিনেও প্রতিষ্ঠানটি দেশের জন্য এই ভূমিকা অব্যাহত রাখবে।

আকরাম খান বলেন, দুটি কারণে আমি যুগান্তরের কাছে কৃতজ্ঞ। প্রথমত, আমি একসময় ক্রিকেট খেলতাম, সেটি মানুষ ভুলে গেছে। যুগান্তর সেটি স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয়ত, ক্রিকেটে আমার অবদানের স্বীকৃতি দিয়েছে। আমি আশা করি, আগামী দিনেও দেশের কল্যাণে কাজ করবে প্রিয় প্রতিষ্ঠানটি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, স্বাধীনতার পর দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছেন ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। এছাড়া অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয়ে পলিসি নির্ধারণে লেখালেখির পাশাপাশি নির্মোহ বিশ্লেষণ করেন তিনি। মির্জ্জা আজিজ শুধু গুণী ব্যক্তি নন, নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও বহু খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদের শিক্ষক। ২০০৭-০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ছিলেন এই গুণী ব্যক্তিত্ব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টারস সম্পন্ন করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের উইলিয়ামস কলেজ থেকে উন্নয়ন অর্থনীতিতে মাস্টারস এবং বোস্টন ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতা দিয়ে পেশাগত ক্যারিয়ার শুরু। ১৯৬৪ সালে সিভিল সার্ভিস ও পাকিস্তান বা সিএসপি অফিসার হিসাবে যোগদান করেন। এরপর পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান সরকার এবং স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮২ সালে জাতিসংঘে যোগদান করেন মির্জা আজিজ। সংস্থাটির প্রতিনিধি হয়ে নিউইয়র্ক ও ব্যাংককে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেন। ২০০১ সালে তিনি জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিকের (এসকাপ) পরিচালক হিসাবে সংস্থাটি থেকে অবসর নেন। পরবর্তীকালে বাংলাদেশে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) ২০০২-০৫ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার হয়েছে। ২০০৬ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন মির্জা আজিজ।

ফেরদৌসী রহমান বাংলা গানের এক জীবন্ত কিংবদন্তি শিল্পী। তিনি তার কণ্ঠসুধায় ছয় দশকের বেশি সময় ধরে সমৃদ্ধ করে চলেছেন বাংলা গানকে। বাংলা গানের সবকটি ধারায় তিনি স্বমহিমায় এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। আধুনিক, লোকগীতি, উচ্চাঙ্গসংগীত, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতিসহ নানা সংগীতধারায় তার স্বতন্ত্র কণ্ঠের মোহময়তা শ্রোতাদের তনুমনে এক অদ্ভুত ভালো লাগার আবেশ ছড়িয়ে যায় আজও।

দেশবরেণ্য এই শিল্পীর জন্ম সংগীত পরিবারে। তার বাবা সংগীতশিল্পী আব্বাসউদ্দিন বাংলা লোকগানের এক অমর নাম। তিনি পল্লিগীতির সম্রাট হিসাবে আজও সমাদৃত। ফেরদৌসী রহমান ১৯৪১ সালের ২৮ জুন পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারে জন্ম নেন। বাবা তার নাম রেখেছিলেন মহান ফারসি কবি ‘ফেরদৌসী’-এর নামে। বাবা-মা ও পরিবার তাকে বেড়ে ওঠার জন্য এমন একটি পরিবেশ দিয়েছিলেন, যা তার মনের গভীরে অত্যন্ত সংবেদনশীলতা এবং সংগীতের জন্য অদম্য তৃষ্ণা বপন করেছিল। বাবা আব্বাসউদ্দিনের কাছেই তার গানের হাতেখড়ি। ১৯৪৬ সালে কলকাতার একটি মঞ্চে ফেরদৌসী রহমান জীবনের প্রথম সংগীত পরিবেশনায় অংশ নেন। তখন তার বয়স মাত্র ছয় বছর।

আর বাংলাদেশের ক্রিকেটের আজকের অবস্থানের সূচনা হয়েছিল ২৬ বছর আগে। আকরাম খানের হাত ধরে আইসিসি ট্রফি জয়ের মধ্য দিয়ে ক্রিকেটে আন্তর্জাতিক সাফল্য শুরু। বর্ণাঢ্য খেলোয়াড় জীবনে তার মুকুটে যোগ হয়েছে অগুনতি পালক। ক্রিকেট অনুরাগীদের মানসপটে আজও উজ্জ্বল ১৯৯৭-এর ১৩ এপ্রিল। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের কিলাত ক্লাব মাঠে ফাইনালে কেনিয়াকে হারিয়ে সেবার শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। আকরাম খানের হাতে উঠেছিল স্বপ্নের সোনালি ট্রফি। তার নেতৃত্বে ওই আসরে বাংলাদেশ পেয়েছিল পাঁচ ম্যাচে পাঁচ জয়। ফাইনালে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ ১৯৯৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো খেলার ছাড়পত্র পায়। পরে নিজেদের অভিষেক বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ড ও পাকিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশ চমকে দিয়েছিল ক্রিকেটবিশ্বকে। সেই হৃদয়ছোঁয়া সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে বাংলাদেশ ২০০০ সালে টেস্ট পরিবারের গর্বিত সদস্য হয় এবং একই বছর ঢাকায় ভারতের বিপক্ষে নিজেদের অভিষেক টেস্ট খেলে। এই ধারাবাহিক সাফল্যের সূচনা হয় যার সুযোগ্য নেতৃত্বে, সেই চৌকশ ডান-হাতি মারকুটে ব্যাটার আকরাম খান ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট ম্যাচে খেলার গৌরবের অধিকারী।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম