Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

ভাষা দিবসেও শহিদ মিনারে দলবাজি হয়েছে: ড. মোশাররফ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ভাষা দিবসেও শহিদ মিনারে দলবাজি হয়েছে: ড. মোশাররফ

শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বিএনপি ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার’ শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা সাড়ে সাতটার সময় বলাকা সিনেমা হলের সামনে থেকে প্রভাতফেরি মিছিল নিয়ে যাই। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের সামনে থেকে সকাল ৮টা থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নাম এখানে বারবার উচ্চারণ করা হয়েছে। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বেদি ত্যাগ করেনি, অযথা সময় নষ্ট করেছে।

বিষয়টি দায়িত্বরত পুলিশ-প্রশাসনের ব্যর্থতা। মহান ভাষা দিবসেও শহিদ মিনারে দলবাজি হয়েছে, এটা দুঃখজনক।’ মঙ্গলবার দুপুরে ভাষাশহিদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ রায় দিয়েছে যে, তারা গণতন্ত্র ও অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, বিচার বিভাগকে কুক্ষিগত করেছে। তারা এ দেশকে মেরামত করতে পারবে না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে আজ জনজীবন বিপন্ন। এ থেকে জনগণ মুক্তি চায়। ভাষা দিবসে আমাদের দাবি অবিলম্বে জনগণের এই প্র?ত্যাশা পূরণ করে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। অবৈধ সংসদ বাতিলের পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘মহান ভাষা আন্দোলনের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আমাদের ওপর জোর করে উর্দু ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সে সময় ছাত্রনেতারা এবং যে রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিবাদ করেছিল, তাদের সংগ্রাম ও রক্তের বিনিময়ে বাংলা ভাষা পেয়েছি। সেই ভাষা আন্দোলন ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের বীজ বপন। সে সময় ভাষা আন্দোলনের উদ্দেশ্য ও চেতনায় ছিল একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। এছাড়া উদ্দেশ্য ছিল জনগণের দ্বারা সরকার গঠন করা ও সেই সরকার জনগণের সেবা করবে।’

‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দরখাস্ত করে বাকশালে যোগ দিয়েছিলেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে ড. মোশাররফ বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের জানা নেই। তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সম্পর্কে সবাই জানেন, নানাভাবে ইনিয়ে-বিনিয়ে এদেশে বহু অপপ্রচার তিনি করেন।’

এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় আজিমপুর কবরস্থানে ভাষাশহিদদের কবর জিয়ারত করেন দলটির নেতাকর্মীরা। খন্দকার মোশাররফের নেতৃত্বে আরও ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শ্যামা ওবায়েদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, তাবিথ আউয়াল, শামীমুর রহমান শামীম, আকরামুল হাসান, রফিক শিকদার, ঢাকা মহানগরের রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহীদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

মির্জা ফখরুলের নিন্দা : এদিকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ভাষাশহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে চরম বিশৃঙ্খলা, সমন্বয়হীনতা এবং বিভিন্ন সংগঠনের পুষ্পার্র্ঘ্য অর্পণ কর্মসূচিতে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ করে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদন কর্মসূচির সময়সূচি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে অনুরোধ করিয়ে পেছানো হয়। পরে আওয়ামী লীগ রহস্যজনক কারণে তাদের প্রভাতফেরির সময় ও রুট পরিবর্তন করে বিএনপির পূর্বঘোষিত প্রভাতফেরিকে প্রলম্বিত করে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চালায়। সকাল সাড়ে সাতটায় নিউমার্কেটস্থ বলাকা সিনেমা হলের সামনে থেকে প্রভাতফেরি শুরুর ৫-৬ ঘণ্টা পর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পৌঁছাতে ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করতে হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বারবার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও এ বিষয়ে তারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, পুষ্পার্ঘ্য নিবেদনে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টোরিয়াল টিম কর্তৃক ন্যক্কারজনক হামলার শিকার হতে হয় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনসহ অন্যান্য নেতাকে। মহান ভাষা দিবসেও কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের মতো পবিত্র স্থানকেও দলবাজির কেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম