Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

কাটছাঁট করে ইভিএম প্রকল্প পাশ চায় না ইসি

Icon

কাজী জেবেল

প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কাটছাঁট করে ইভিএম প্রকল্প পাশ চায় না ইসি

জনবল সংখ্যা এবং গাড়ি কেনার টাকা কাটছাঁট করে দুই লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন কেনার প্রকল্প পাশ হোক-তা চায় না নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এসব প্রকল্পের আওতায় রেখেই আবারও এ সংক্রান্ত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। গত রোববার পাঠানো এ ডিপিপিতে প্রকল্পের ব্যয় আট হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বহাল রেখেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।

এবারও প্রস্তাবিত এ প্রকল্প পাশের যৌক্তিকতা হিসেবে কোনো সমীক্ষা প্রতিবেদন পরিকল্পনা কমিশনকে দেয়নি ইসি। এর পরিবর্তে ইভিএম ব্যবহারে নির্বাচন কমিশনের অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন সময়ে কারিগরি ব্যক্তিদের মতামত প্রতিবেদন আকারে জমা দেওয়া হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন এ প্রকল্প পাশে ডিপিপির সঙ্গে সমীক্ষা প্রতিবেদন, গাড়ি ক্রয়ের পরিবর্তে ভাড়া নেওয়াসহ বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছিল। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

আরও জানা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নে ইসি সচিবালয় এক হাজার ৩০৩ জন জনবল চায়। অর্থ মন্ত্রণালয় তা কমিয়ে ১৩ জনের অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সচিবালয় পুরো জনবল চেয়ে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ যুগান্তরকে বলেন, পরিকল্পনা কমিশন থেকে কিছু পর্যবেক্ষণ ও মতামত দিয়েছিল। আমরা সেগুলোর জবাব দিয়ে আবারও ডিপিপি পাঠিয়েছি। এখন এটি পাশ করার বিষয়ে বাকি পদক্ষেপ নেবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের ব্যয় অপরিবর্তিত থাকছে। আমাদের যেসব কম্পোনেন্ট দরকার সেগুলোর বিষয়ে যুক্তি দিয়েছি। জনবলের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে আমাদের দাবির যৌক্তিকতা উল্লেখ করে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ লক্ষ্যে আরও দুই লাখ ইভিএম কিনতে আট হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ ২৩ হাজার টাকা ব্যয়ে গত অক্টোবরে ‘নির্বাচনি ব্যবস্থায় ইভিএম’র ব্যবহার বৃদ্ধি এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্প প্রস্তাব পাঠায় ইসি। পরিকল্পনা কমিশন বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে ওই ডিপিপি ইসিতে ফেরত পাঠায়। গত রোববার আবারও ডিপিপি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠাল ইসি। যদিও নির্বাচন কমিশন বলে আসছে, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রকল্প পাশ না হলে আগামী সংসদ নির্বাচনে দেড়শ আসনে এ মেশিনে ভোটগ্রহণ সম্ভব হবে না। অপরদিকে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব এ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হবে।

আরও জানা গেছে, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় যেসব পর্যবেক্ষণ ও মতামত দিয়ে ডিপিপি ফেরত পাঠিয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম ছিল এ প্রকল্প পাশের ক্ষেত্রে সমীক্ষা প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। ইসি সূত্র জানায়, এ বিষয়ে সমীক্ষা করতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট নামক সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ইসি সচিবালয়। ওই প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তাদের সমীক্ষা করতে অন্তত চার মাস সময় প্রয়োজন হবে। ওই সমীক্ষা সময়সাপেক্ষ হওয়ায় ইসি সচিবালয় সমীক্ষা প্রতিবেদন ছাড়াই ডিপিপি পাঠিয়েছে। তবে সমীক্ষা প্রতিবেদনের পরিবর্তে বিগত দিনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছে ইসি সচিবালয়। এতে বলা হয়েছে ২০০৬ সাল থেকে ইভিএম ব্যবহার করে আসছে কমিশন। ১২ বছর বিভিন্ন ধরনের ইভিএম ব্যবহারের পর ২০১৮ সালে বর্তমান প্রযুক্তির দেড় লাখ ইভিএম কেনা হয়। এসব ইভিএম দিয়ে এক হাজার ১৪৩টি নির্বাচন করা হয়েছে। এছাড়া ইভিএম’র ওর ওয়ার্কশপ ও সেমিনারের কারিগরি বিশেষজ্ঞ এবং এ মেশিন ব্যবহারকারীদের মতামতও তুলে ধরা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যমান ইভিএম প্রকল্পের পরিচালক কর্নেল রাকিবুল হাসান যুগান্তরকে বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান দিয়েই সমীক্ষা করতে যে সময়ের প্রয়োজন হতো তাতে এখন পর্যন্ত ডিপিপি তৈরি করা যেত না। ওই সময়ক্ষেপণ করে ডিপিপি তৈরি এবং তা অনুমোদন করতে করতেই নির্বাচনের সময় চলে আসত। এর ফলে আগামী নির্বাচনের আগে নতুন ইভিএম কেনা সম্ভব হবে না।

আরও জানা গেছে, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় গাড়ি কেনার পরিবর্তে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ভাড়া নেওয়ার মতামত দিয়েছিল। ওই মতামত গ্রহণ করেনি ইসি। এর জবাবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে ইসি জানিয়েছে, প্রকল্পের আওতায় ৫৩৪টি ডাবল কেবিন বিশিষ্ট পিকআপ কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব গাড়ি নির্বাচনে কারিগরি মোবাইল টিমসহ নির্বাচন তদারকি কাজে নিয়োজিত জনবল দ্রুত পরিবহণের জন্য ব্যবহার করা হবে। এতে আরও বলা হয়, ইভিএম একটি প্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনি পদ্ধতি। এ প্রযুক্তির সঙ্গে ভোটারদের পরিচিত করে তুলতে ব্যাপক ভোটার শিখন কার্যক্রমে সুবিধার্থেও এসব গাড়ি দরকার। এছাড়া ইভিএম কাস্টমাইজেশনের জন্য আঞ্চলিক ওয়্যারহাউজে পাঠানোর জন্যও পিকআপ দরকার।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম