
প্রিন্ট: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২২ পিএম

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নজিরবিহীন দুর্নীতির কারণে অস্বাভাবিক গতিতে বেড়ে যাচ্ছে খেলাপি ঋণ। মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকে নানা সমস্যা বিরাজ করছে; এমনকি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও বৈরী পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বগতিতে লাগাম টানতে ঋণখেলাপিদের আবারও বড় ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ বিষয়ে সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করা হয়।
এতে বলা হয়েছে, এখন থেকে বিদ্যমান ঋণস্থিতির ন্যূনতম ৫ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নগদে পরিশোধ করে এক্সিট সুবিধাপ্রাপ্তির আবেদন করতে পারবেন ঋণখেলাপিরা। আগে কমপক্ষে ১০ শতাংশ পরিশোধ করে আবেদন করতে হতো। পাশাপাশি এ সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। আগে মূল ঋণ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত এক্সিট সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান নির্বাহী বা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ অনুমোদন করতে পারতেন। এখন তারা ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত খেলাপি ঋণের এক্সিট সুবিধা দেওয়ার আবেদন অনুমোদন করতে পারবেন। নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে যেসব উদ্যোক্তা ঋণখেলাপি হয়েছেন, কেবল তারাই এর আওতায় এক্সিট সুবিধা পাবেন। এক্সিট সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ হিসাবে গ্রাহক নির্ধারিত কিস্তি অনুযায়ী পরিশোধ না করলে তা খেলাপি হলে কোনো অবস্থাতেই পুনঃতফশিলীকরণ বা পুনর্গঠন করা যাবে না। এ সুবিধাপ্রাপ্তির পর গ্রাহক পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে ঋণ আদায়ে ব্যাংক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
অতীতে খেলাপি ঋণ কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন সময়ে নানা সুযোগ-সুবিধা ও ছাড় দেওয়া সত্ত্বেও দেশে কেন অস্বাভাবিক গতিতে বেড়েছে খেলাপি ঋণ, তা খতিয়ে দেখা দরকার। ঋণখেলাপিদের ফের বড় ছাড় দেওয়ায় কতটা সুফল মিলবে, এটাই এখন দেখার বিষয়। দেশের ব্যাংক খাতে বড় এক সমস্যা হলো মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণ। খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণ হিসাবে কেউ কেউ বাণিজ্যিক ব্যাংকের দুর্বল ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন।
বস্তুত খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণগুলো বহুল আলোচিত, এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের কী করণীয়, এটাও বহুল আলোচিত। অন্তর্বর্তী সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়ায় ব্যাংক খাত থেকে লুটপাট ও অর্থ পাচার বন্ধ হয়েছে। তবে যেহেতু খেলাপি ঋণ ব্যাংক খাতে দুরারোগ্য ব্যাধির রূপ নিয়েছে, সেহেতু এ খাতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে যত দ্রুত সম্ভব যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। খেলাপি ঋণ আদায়ের পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি ব্যাংক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করার পদক্ষেপও নিতে হবে।