অর্থনীতিতে শ্লথগতি
সংকট উত্তরণে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ছবি: সংগৃহীত
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পর্বতপ্রমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। ঋণের নামে ব্যাংক থেকে অর্থ নিয়ে পাচার করা হয়। অন্যদিকে বিপুল অঙ্কের খেলাপি ঋণ আদায় করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ফলে দেশের অধিকাংশ ব্যাংক আর্থিক সংকটে পড়েছে। বস্তুত দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে এক ধরনের স্থবির অবস্থা বিরাজ করছে; নিুগামী হচ্ছে অর্থনীতির সূচকগুলো। ব্যবসা-বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে বহুমুখী সংকটের কথা বলছেন শিল্পোদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা। অর্থ সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো টাকা দিতে পারছে না গ্রাহকদের। এদিকে মাত্রাতিরিক্ত সুদহারের কারণে শিল্পোদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন।
জানা যায়, দেশের অর্থনীতিতে স্থবির অবস্থা বিরাজ করার কারণে অর্থ বিভাগ মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামোতে মুদ্রা ও আর্থিক খাতে বিভিন্ন সূচকের সংশোধন এনেছে এবং সম্প্রতি এতে অনুমোদন দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। তবে আগামীতে বেসরকারি খাতের পরিস্থিতি ভালো হতে পারে এমন প্রত্যাশা থেকে বেসরকারি ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়ানো হয়েছে। বস্তুত বিভিন্ন কারণে বর্তমানে অর্থের চাহিদা কমেছে। বর্তমানে দেশে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বিনিয়োগ হচ্ছে না। এ কারণে উৎপাদন হচ্ছে কম। ফলে বেসরকারি খাতে স্থবিরতা বিরাজ করছে। বেসরকারি খাত স্থবির হলে দেশের পুরো অর্থনীতিতেই এর প্রভাব পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়েছে কর্মসংস্থানেও। দেশের সার্বিক অর্থনীতির স্বার্থে বেসরকারি খাতকে চাঙা করার পদক্ষেপ নিতে হবে। এ লক্ষ্যে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিতে হবে। মানুষের যাতে ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, সেজন্যও নিতে হবে পদক্ষেপ।
বিশষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে নানা চাপ রয়েছে। এখন অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে শিল্পোদ্যোক্তারা দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে বেশ চিন্তিত। তাদের অনেক বলেছেন, বেঁচে থাকার জন্য এ মুহূর্তে সংগ্রাম করে যাচ্ছি। তারা ঋণের উচ্চ সুদহার নিয়ে বিশেষভাবে চিন্তিত। অনেক ব্যাংকে নানা সংকট বিদ্যমান। এসব ব্যাংকের সংকট দূর করার পদক্ষেপ নিতে হবে। খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলো যাতে সফল হতে পারে, সেজন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। আগামীতে যাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ না বাড়ে, সেদিকেও দিতে হবে বিশেষ দৃষ্টি। ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সংকট দূর করা সম্ভব না হলে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে নেওয়া পদক্ষেপগুলো থেকে সুফল মিলবে কিনা সন্দেহ।