Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

অর্থনীতি পর্যালোচনা

জনজীবনে দ্রুত স্বস্তি আনা প্রয়োজন

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অর্থনীতি পর্যালোচনা

ফাইল ছবি

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বুধবার ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৪-২৫ : সংকটময় সময়ে প্রত্যাশা পূরণের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে।

এ আলোচনায় দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সংস্থাটির কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়। বলা হয়, দেশের অর্থনীতির বেশিরভাগ সূচক অবনমনের দিকে। রাজস্ব আদায়, মূল্যস্ফীতি, কর্মসংস্থান, বেসরকারি বিনিয়োগ, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি, পুঁজিবাজার ও বৈদেশিক বিনিয়োগ পরিস্থিতি ভালো নয়। তবে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বাড়ছে। বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভেও স্বস্তির ইঙ্গিত আছে।

বস্তুত অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ছয় মাস পার হলেও জনজীবন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বস্তি আনার পদক্ষেপ নেই। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহের বিভিন্ন পর্যায়ে চাঁদাবাজি, মজুতদারি ও অন্যান্য অনিয়ম বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারের ব্যর্থতার চিত্র ফুটে উঠেছে সিপিডির ব্রিফিংয়ে। বস্তুত মূল্যস্ফীতি ও অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিই এ মুহূর্তে সাধারণ মানুষকে সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে।

এ দুটি ক্ষেত্রে উন্নতির চেষ্টা করে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে সব ক্ষেত্রে যে সাফল্য আসেনি, সরকারের পক্ষ থেকেও তা স্বীকার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে অন্তর্বর্তী সরকার স্বৈরাচারী সরকারের কাছ থেকে একটি ভঙ্গুর অর্থনীতি পেয়েছে। বিগত সরকারের সময় থেকেই অর্থনৈতিক পরিস্থিতির দুর্বলতাগুলো প্রকাশ পাচ্ছিল। মূলত সীমাহীন দুর্নীতি, বিপুল অঙ্কের খেলাপি ঋণ ও অর্থ পাচার এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী। অন্তর্বর্তী সরকার এসে এসব সমস্যা নিরসনে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে সরকারের রাজস্ব আহরণে গতি আসেনি। আইনশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে বলতে হয়, ৫ আগস্ট বিগত সরকারের পতনের পর পুলিশ বাহিনী পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল। এর প্রভাব পড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর। পরবর্তী সময়ে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে ক্রমান্বয়ে পুলিশ সক্রিয় হলেও এখনো দৃঢ় অবস্থানে দাঁড়াতে পারেনি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো নাজুক, যার প্রভাব পড়ছে জনজীবন ও অর্থনীতিতে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, জনজীবন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বস্তি আনার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। সিপিডির ব্রিফিংয়েও বলা হয়েছে, দেশে রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক স্থিতিশীলতা না থাকলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসে না। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা। সিপিডি বলছে, ‘অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ডিসেম্বর থেকে পরের বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার কথা বলেছে। ঘোষিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া উচিত। কারণ জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া কোনো সরকার বেশিদিন থাকতে পারে না। ফলে যত দ্রুত সম্ভব গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে হবে।’

সিপিডি একইসঙ্গে বলেছে, রাজনৈতিক সংস্কার ছাড়া অর্থনৈতিক সংস্কার সম্ভব নয়। তাদের মতে, সরকারকে আগামী দিনের জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও কার্যকর কৌশল গ্রহণ করতে হবে, যা তাৎক্ষণিক সংকট মোকাবিলা করবে এবং পরবর্তীকালে রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য মাঝারি থেকে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের সূচনা করবে। আমরা মনে করি, সিপিডির এসব পর্যবেক্ষণ খতিয়ে দেখে অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনৈতিক দলগুলো এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম