দেশে ক্যানসারের চিকিৎসা
উন্নত ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
দেশে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়লেও অনেক গরিব রোগী আধুনিক চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যাদের সামর্থ্য আছে, তারা বিদেশে গিয়ে চিকিৎসাসেবা নিতে সক্ষম হলেও এক্ষেত্রে দরিদ্র রোগীদের দেশের সরকারি হাসপাতালের ওপরই নির্ভর করতে হয়।
ক্যানসারে আক্রান্ত দরিদ্র রোগীরা সাধারণত জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন। অন্য অনেক সরকারি হাসপাতালের মতো এ প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে রোগীদের দুর্ভোগের শিকার হওয়ার বিষয়টি বহুল আলোচিত। এক্ষেত্রে শয্যা ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সংকটের বিষয়টিও বারবার আলোচনায় আসে। এসব সমস্যার সমাধানে দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
বর্তমানে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ক্যানসারের ওষুধ দেশে তৈরি হলেও সমন্বিত চিকিৎসাকেন্দ্র ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তীব্র সংকট রয়েছে। এ রোগের চিকিৎসায় দেশে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার অপ্রতুল হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে নির্ভুল রোগ নির্ণয় করাও সম্ভব হচ্ছে না। এসব সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। দেশে ক্যানসার রোগীর যতটুকু সেবার ব্যবস্থা রয়েছে, তার প্রায় পুরোটাই রাজধানীকেন্দ্রিক। বিত্তবান রোগীদের বড় একটি অংশ চিকিৎসার জন্য বিদেশ যান। রোগী ও তাদের স্বজনদের আস্থা অর্জন করা সম্ভব না হলে চিকিৎসা খাতে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে চলে যাবে।
অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, পরিবেশদূষণসহ নানা কারণে ক্যানসার বড় স্বাস্থ্য সমস্যা হিসাবে দেখা দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বাংলাদেশের মানুষ কমপক্ষে ৩২ ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে ক্যানসারে আক্রান্ত প্রায় ৫০ শতাংশ রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। কাজেই প্রাথমিক পর্যায়েই যাতে দেশে ক্যানসার শনাক্ত করা যায়, সেজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
দেশে সব ধরনের জটিল রোগের চিকিৎসা যাতে সুলভে পাওয়া যায়, তা নিশ্চিত করা দরকার। যেসব কারণে ক্যানসার ও অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে, সেসব বিষয়ে জনগণকে সচেতন করে তোলার পদক্ষেপও নিতে হবে। বর্তমানে বিভিন্ন দেশ ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগের চিকিৎসায় উন্নতি করছে। এক্ষেত্রে আমাদেরও এগিয়ে যেতে হবে। যে কোনো রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে যাতে দুর্ভোগের শিকার হতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।