শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে অধিভুক্ত সাত কলেজকে পৃথক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকে সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি করা হবে না। পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রম পরিচালনার সুপারিশ করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে সাত কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে জরুরি সভা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। সেখানেই এসব সিদ্ধান্ত হয়। আরও আগেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল বলে মনে করি আমরা। জানা যায়, ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এসএম এ ফায়েজের নেতৃত্বে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি শিগ্গিরই সাত কলেজ নিয়ে একটি রূপরেখা দেবেন। সে অনুযায়ী সাত কলেজ নিয়ে একটি বডি গঠিত হবে। নতুন এ বডির অধীনে চলতি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, যেসব শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান শিক্ষা কার্যক্রমের অধীনে আছে, তাদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্বশীল থাকবে, যাতে তাদের শিক্ষাজীবন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ঢাবি অধিভুক্ত থেকে পৃথক হওয়ার দাবি ছিল অনেকদিনের। একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠারও দাবি রয়েছে তাদের। এক্ষেত্রে কিছু বাস্তবতা সবাইকেই মানতে হবে। তা হলো, রাতারাতি একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা সহজ নয়। এজন্য প্রথমে সংবিধি তৈরি করতে হয়, সেখানে শিক্ষক নিয়োগসহ আরও অনেক বিষয় থাকবে। এছাড়া আইন ও অর্থের বিষয়ও রয়েছে। তারপরই প্রতিষ্ঠা পায় বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা উপদেষ্টা জানিয়েছেন, আট বছর আগে তৎকালীন সরকার বিবেচনাহীনভাবে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করে। এর ফলেই তৈরি হয়েছে এ জটিল সমস্যা। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা টেকসই করার জন্য সময়ের প্রয়োজন হবে।

আমরা মনে করি, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ও পরীক্ষার ক্ষেত্রে যেন কোনো সমস্যা বা জটিলতা আর সৃষ্টি না হয়, প্রথমে সেটিই নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এরপর ভেবেচিন্তে সবকিছু নির্ধারণ করতে হবে। শিক্ষা উপদেষ্টা জানিয়েছেন, যেহেতু সনদ পাওয়ার আগে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো সম্পূর্ণ বেআইনি, তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের কর্তৃপক্ষ আগামী সেশন থেকে আলাদাভাবে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, আসন্ন ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তির বিষয়ে কলেজের শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়া হবে এবং তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। তার এ বক্তব্য সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা অনুধাবন করে শান্ত হবেন, এটাই প্রত্যাশা।