সচিবালয়ের অগ্নিনিরাপত্তা বিধান
পুরোনো প্রস্তাবের ফাইলগুলো খুলুন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
অতি সম্প্রতি প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হতবাক হয়ে পড়েছিল গোটা জাতি।
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনের ফ্লোরে ঘটে যাওয়া এ অগ্নিকাণ্ডের পর সমগ্র সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলা যায় আতঙ্কে রয়েছেন। পরিতাপের বিষয় হলো, অগ্নিকাণ্ড ঘটার পর সরকারি উচ্চমহল বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও এবং সচিবালয়ে আগুনের ঝুঁকি নিরসনে অতীতে অনেক প্রস্তাব দেওয়া হলেও সেগুলোর কোনোটিই কার্যকর করা হয়নি।
প্রায় অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ২০২১ সালে ৩ কোটি ২৭ লাখ টাকার, ২০২২ সালে ৭৫ কোটি টাকার এবং ২০২৩ সালে ২৮ কোটি টাকার সংস্কার প্রস্তাব নেওয়া হলেও এসব প্রস্তাবের কোনোটারই অনুমোদন পাওয়া যায়নি।
ওদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি নিরসনের কোনো উদ্যোগ তো নেইই, বাড়ছে বিদ্যুতের যথেচ্ছ ব্যবহার, অনাপত্তিপত্র ছাড়াই সংযুক্ত করা হয়েছে এসি, ফ্রিজ, ওভেন ও রুম হিটার। সার্ভিস লাইন আপডেট করা নিয়েও কারও কোনো মাথাব্যথা নেই।
বিদ্যুতের ওভারলোডের কারণে যে কোনো মুহূতেই যে সচিবালয়ে শর্টসার্কিট থেকে ছোট অথবা বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে, এ আশঙ্কা কেউ মাথায় নিচ্ছেন না। দুর্বল ও জরাজীর্ণ সার্ভিস লাইন আপডেট করাসহ প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে জমা দেওয়া ৩ কোটি ২৭ লাখ টাকার একটি প্রস্তাবসহ অনেক প্রস্তাব ঝুলে আছে।
এ অবস্থায় আমাদের কথা হলো, ঝুলে থাকা প্রস্তাবগুলো দ্রুত বিবেচনায় নিতে হবে। সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একটা প্রশ্ন সামনে এসেছে; সচিবালয়ের, বিশেষত নথিগুলো কতটা নিরাপদ? অগ্নিকাণ্ডের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে রক্ষা পেতে শুধু সচিবালয়ের বৈদ্যুতিক সিস্টেমই আপডেট করলে চলবে না, এই চত্বরের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও কার্যকরভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
দ্বিতীয় কথা, বর্তমান সময়টা বিপদসংকুল বলা যায়। সচিবালয়ে যাতে কেউ কোনো ধরনের নাশকতা করতে না পারে, সেজন্য এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে, সার্বক্ষণিক মনিটরে রাখতে হবে এ কমপ্লেক্সের যাবতীয় তৎপরতা। আমরা আশা করব, সচিবালয়ে আগামীতে ছোট কিংবা বড়, কোনো অগ্নিকাণ্ডই ঘটবে না এবং এর কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ যাবতীয় নথির নিরাপত্তা বিধান করা হবে।