Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ: স্বাধীন মতপ্রকাশকে প্রাধান্য দিতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ: স্বাধীন মতপ্রকাশকে প্রাধান্য দিতে হবে

প্রতীকী ছবি

বিগত সরকার পতনের পর বাকস্বাধীনতার অন্যতম প্রধান অন্তরায় বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের ঘোষণা দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এদিকে সংশোধিত সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের ব্যাপারে সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে এটিও মানুষের মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ প্রসঙ্গে দুর্নীতিবিরোধী বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, এ অধ্যাদেশে জনস্বার্থের প্রতিফলন নেই। বরং চূড়ান্তভাবে অনুমোদন হলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রশ্নে এটি নিয়ন্ত্রণমূলক ও নজরদারির অধ্যাদেশে পরিণত হবে। মঙ্গলবার সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেছেন, সাইবার, ইন্টারনেট, ডিজিটাল-সব মিলিয়ে নতুন এ আইনটি জগাখিচুড়ি অধ্যাদেশে পরিণত হয়েছে।

সংস্থাটির পর্যালোচনা হচ্ছে, সাইবার সুরক্ষা নামে হলেও আগের আইনগুলোর এক ধরনের পুনরাবৃত্তি এটি। বরং বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রশ্নে এটি নিয়ন্ত্রণমূলক ও নজরদারির অধ্যাদেশে পরিণত হয়েছে। ডিজিটাল অধিকারের কথা বলা হয়েছে; কিন্তু পুরো অধ্যাদেশে অধিকারের কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। বরং মতপ্রকাশকে খর্ব করার প্রক্রিয়া দেখা যায়, যা গ্রহণযোগ্য নয়। টিআইবি প্রধান বলেছেন, আগের দুটি আইনেও বলা হয়েছিল, তা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যাবে না। এবারও সেই একই কথা শোনা গিয়েছিল; কিন্তু অনুমোদিত অধ্যাদেশে তা দেখা যাচ্ছে না। এভাবেই যদি তা আইনে পরিণত হয়, তাহলে সংবাদমাধ্যমসহ সব মানুষের তথ্য প্রকাশের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা ও সংগঠনের স্বাধীনতা ঝুঁকিতে পড়বে। দেখা গেছে, এ অধ্যাদেশে সাইবার সুরক্ষা এজেন্সির মহাপরিচালক ও পুলিশকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তা আওয়ামী লীগ আমলের সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এতে অনেক শব্দের ব্যাখ্যা নেই, ভাষা দুর্বোধ্য। ফলে এর অপব্যবহারের সুযোগও তৈরি হবে।

এ অবস্থায় সংশোধিত সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশটি সঠিক তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশে হুমকি হয়ে দেখা দেবে কিনা, এ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ থাকাটা স্বাভাবিক। সরকারকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে, নতুন যে আইনটি হচ্ছে, তা বিরোধী মত দমন এবং মুক্ত মতপ্রকাশকে বাধাগ্রস্ত করতে ব্যবহার করা হবে না। এ লক্ষ্যে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আইনটির সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা এখনো রয়েছে। নয়তো আইনটির মাধ্যমে বিরোধী মত দমন ও হয়রানির আশঙ্কা থেকেই যাবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম