ঘন কুয়াশায় সড়কে যান চলাচল এবং নৌপথে নৌচলাচল বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। এ বছর জানুয়ারি না আসতেই দেখা দিয়েছে ঘন কুয়াশা। শনিবার গভীর রাতে ও রোববার সকালে সড়ক ও নৌপথে কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় একজন প্রাইভেটকার চালক নিহত ও ১৫ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের দুটি স্থানে গাড়ির সঙ্গে গাড়ির অন্তত আটটি সংঘর্ষ হয়েছে।

এছাড়া চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে দুটি যাত্রীবাহী লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়, অবশ্য এতে লঞ্চ দুটির সামান্য ক্ষতি হলেও হতাহত হননি কেউ। ওদিকে কুড়িগ্রামে ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। কুড়িগ্রামে তীব্র শীতের কারণে ৪-৫ দিন থেকে ট্রলি চালানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। অর্থাৎ সাধারণ গরিব মানুষের আর্থিক কষ্ট বেড়েছে অনেক।

দেশে এমনিতেই সড়ক দুর্ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। প্রতিদিনই কোথায়ও না কোথাও দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। নৌ দুর্ঘটনাও ঘটে কখনো কখনো। স্বাভাবিকভাবেই ঘন কুয়াশায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে গেছে। হেডলাইট জ্বালিয়ে কতটাই বা সামলানো যায়! বিশেষত দূরপাল্লার যানবাহনগুলো পড়ছে বেশি বিপদে। চালককে সার্বক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। হেডলাইটে গাড়ি চালাতে হচ্ছে বলে গাড়ির গতিও কমে যাচ্ছে। ফলে নির্ধারিত সময়ের অনেক বিলম্বে যাত্রীরা পৌঁছাচ্ছেন গন্তব্যে।

কুয়াশা প্রকৃতিরই আচরণ। একে মোকাবিলা করা যায় না। শীত মৌসুমে কুয়াশা দেখা দেবেই। সুতরাং সতর্কতা অবলম্বন করা ছাড়া দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না। আমরা আশা করব, সড়ক ও নৌপথের যানবাহনের চালকরা বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করবেন এই বিশেষ সময়ে। লঞ্চ চালকদের জন্য বিষয়টি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ লঞ্চের যাত্রীর সংখ্যা সড়কপথের যাত্রীদের সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। ফলে লঞ্চ দুর্ঘটনায় প্রাণহানির আশঙ্কাও থাকে বেশি।

কুয়াশা এড়ানোর জন্য যানবাহন চালানোর নির্ধারিত সময়ে পরিবর্তন আনা যায় কিনা, সেটাও ভেবে দেখা যেতে পারে। সবশেষ কথা, শীতের ক্ষণস্থায়ী এ সময়টা অতি সাবধানতার সঙ্গে পার করতে হবে আমাদের।