অনিরাপদ সড়ক, অপমৃত্যু কমানোর পদক্ষেপ প্রয়োজন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় একটি প্রাইভেট কারের ধাক্কায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী মোটরসাইকেল আরোহী মুহতাসিম মাসুদের নিহত হওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপশহরে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতেই ঘটে এ ঘটনা। এ ঘটনায় বুয়েটের আরও দুই শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। বস্তুত রাজধানীসহ সারা দেশে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা ঘটনায় অপমৃত্যু বাড়ছে। দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলোয় যানবাহন চলাচলে কোনো শৃঙ্খলা না থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। পরিবহণ খাতে বিশৃঙ্খলার মূল কারণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অদক্ষতা এবং পেশাদারী মনোভাবের অভাব। অতিরিক্ত গতি এবং চালকের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে ঘটে থাকে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা। বস্তুত আইন না মানার প্রবণতা সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাসহ সড়ক ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে লোকবল কম, এ তথ্য আমরা জানি। তবে দুর্নীতি রোধে কর্তৃপক্ষ কঠোর হলে কম লোকবল দিয়েও বিভিন্ন অভিযানে কাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়া সম্ভব। যেহেতু সারা দেশের সড়ক-মহাসড়কে নৈরাজ্য ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, সেহেতু সমস্যার সমাধানে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। সড়ককে নিরাপদ করার লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কেন কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না, তাও খতিয়ে দেখা দরকার। দক্ষ চালক তৈরির পাশাপাশি তাদের পর্যাপ্ত বিশ্রামের সুযোগ দিতে হবে। পরিবহণ শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নয়নেও নিতে হবে যথাযথ পদক্ষেপ।
দেশে যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষার প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ। এ প্রক্রিয়া ত্রুটিমুক্ত করা না হলে যত পদক্ষেপই নেওয়া হোক, তাতে কতটা সুফল মিলবে, প্রশ্ন রয়েছে। এক্ষেত্রে সরষের ভূত দূর করতে হবে আগে। নিরাপদ সড়কের লক্ষ্য বাস্তবায়নে অতীতে নেওয়া প্রকল্পগুলোর সুফল কেন মেলেনি, তা খতিয়ে দেখা দরকার। রাজধানীর জনসংখ্যার তুলনায় সড়ক বা যানবাহন কোনোটাই যথেষ্ট নয়। জরাজীর্ণ গণপরিবহণের কারণে রাজধানীতে বাড়ছে ব্যক্তিগত গাড়ি। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামীতে কী সমস্যা সৃষ্টি হবে, তা ভেবে দেখা জরুরি। রাজধানীসহ সারা দেশে সড়ককে নিরাপদ করার জন্য যা যা করণীয়, এর সবই করতে হবে। বস্তুত সব ধরনের অপমৃত্যু রোধেই নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।