ঢাকায় জিকা ভাইরাস শনাক্ত
এডিস মশা নির্মূলে জোরালো পদক্ষেপ নিন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দেশবাসী যখন ডেঙ্গুর ভয়াবহতা নিয়ে চিন্তিত, তখন রাজধানীতে এডিস মশাবাহিত জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। তিন মাসে আটজনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। চিকিৎসা নেওয়ার পর তারা এখন ঝুঁকিমুক্ত। গত বছরও পাঁচজন জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন। জিকা ভাইরাস দেশে প্রথম শনাক্ত হয় ২০১৪ সালে। জিকায় আক্রান্ত রোগীর কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। এর চিকিৎসা উপসর্গভিত্তিক। গবেষকরা বলছেন, জিকার পাশাপাশি রাজধানীতে এখন চিকুনগুনিয়ায় অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন। রাজধানীতে একসঙ্গে ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়া-এসব রোগের প্রাদুর্ভাবের বিষয়টি উদ্বেগজনক। তিনটি রোগই ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে। কাজেই এডিস মশা নির্মূলে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে জিকা শনাক্ত হওয়ার বিষয়টিকে হালকাভাবে না দেখে এ রোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে। উল্লেখ্য, এ ভাইরাসে আক্রান্ত ৮০ শতাংশ ব্যক্তির ক্ষেত্রে রোগের কোনো লক্ষণ দেখা যায় না।
গর্ভবতী মা জিকায় সংক্রমিত হলে গর্ভের সন্তানের ‘মাইক্রোসেফালি’ রোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ রোগ হলে শিশুর মস্তিষ্কের গঠন বাধাগ্রস্ত হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ রোগে আক্রান্ত শিশু ছোট আকৃতির মাথা নিয়ে জন্ম নেয়। মস্তিষ্কের গঠন ঠিকমতো না হওয়ায় শিশুর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী, শারীরিক বৃদ্ধি অস্বাভাবিক বা বিলম্বিত হওয়া থেকে শুরু করে অকালে মারা যাওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়। বয়স্ক কারও এ রোগ হলে আক্রান্ত ব্যক্তির নানা রকম শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। যেহেতু জিকার এখনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি, সেহেতু এ রোগ থেকে সুরক্ষা পেতে সতর্ক থাকার বিকল্প নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, জিকা আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিশ্রাম নিতে হবে; প্রচুর পানি ও তরলজাতীয় খাবার খেতে হবে; জ্বর ও ব্যথার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করতে হবে। রোগীর অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত নিকটস্থ মানসম্মত হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে বা রোগীকে ভর্তি করাতে হবে।
জিকা ভাইরাসের বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার জন্য কর্তৃপক্ষের যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিতে হবে। এডিসসহ সব ধরনের মশার উৎস পুরোপুরি নির্মূলে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।