চালের বাজারে সিন্ডিকেট
কঠোর পদক্ষেপের বিকল্প নেই
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সংগৃহীত
এখন বাজারে উঠেছে আমনের নতুন ধান। এবার উৎপাদনও হয়েছে আশানুরূপ। ১০ দিনের মধ্যে ধানের দাম মনপ্রতি কমেছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা। এরপরও চালের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করার বিষয়টি উদ্বেগজনক। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, চালের বাজার অস্থিরতার পেছনে কাজ করছে আওয়ামীপন্থি মিল মালিকদের কারসাজি। নানা অজুহাতে তারাই বাড়াচ্ছেন চালের দাম। একাধিক সূত্রমতে, চালের বাজার অস্থিতিশীল করে তুলে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে কাজ করছেন আওয়ামীপন্থি মিল মালিকরা। এদিকে আমনের ভরা মৌসুমে চট্টগ্রামেও বাড়ছে চালের দাম। দুঃখজনক হলো, দাম স্থিতিশীল রাখতে শুল্ক প্রত্যাহার, বিপুল পরিমাণ চাল আমদানির পরও বাজারে দামের প্রভাব নেই। প্রতি বস্তা চালের দাম ১৫ দিনের ব্যবধানে বেড়েছে ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। নানা উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও কেন চালের বাজারের অস্থিরতা দূর হচ্ছে না, তা খতিয়ে দেখা দরকার।
চালসহ নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশে বিপুলসংখ্যক নিম্ন-আয়ের পরিবার খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়েছে। দেশে বিপুলসংখ্যক দরিদ্র মানুষকে ঋণ করে খাবার কিনতে হচ্ছে। বহুদিন ধরেই এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রশ্ন হলো, যাদের ঋণ করার সুযোগ নেই তাদের কী হবে? বস্তুত সিন্ডিকেটের কারণেই চালের বাজারের অস্থিরতা দূর হচ্ছে না। ক্ষমতার পালাবদলের পরও চালসহ নিত্যপণ্যের বাজারের অস্থিরতা দূর হচ্ছে না, এটা দুঃখজনক। পরিবহণ খাতেও চাঁদাবাজি কমেনি। দুঃখজনক হলো, সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা যেন স্থায়ী রূপ নিচ্ছে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কঠোর হতে হবে।
বর্তমান দরিদ্র মানুষ অর্থের অভাবে সময়মতো চিকিৎসকের কাছে যেতে পারছেন না। চালসহ নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশে বিপুলসংখ্যক মানুষ পুষ্টিকর খাবার ক্রয় করার সামর্থ্য হারিয়েছে। নিত্যপণ্যের দাম চড়া থাকলে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত বাধ্য হয়ে খাওয়া কমিয়ে দেয়। কাজেই যেভাবেই হোক, নিত্যপণ্যের বাজারের অস্থিরতা দূর করতে হবে। এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, অসাধু ব্যবসায়ীদের ন্যূনতম মানবিকতা বলতে কিছুই নেই। সঠিকভাবে আইন প্রয়োগ করে দ্রুত সব ধরনের পণ্যের বাজারের অস্থিরতা দূর করতে হবে। বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে তদারকির পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে। অতিলোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।