Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

রোজার আগেই কারসাজি

যথাযথ বাজার তদারকি জরুরি

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রোজার আগেই কারসাজি

রোজা যত ঘনিয়ে আসছে, ভোজ্যতেলের বাজারে অসাধু চক্রের কারসাজি ততই বাড়ছে। কোমর বেঁধে সক্রিয় হচ্ছে সিন্ডিকেট। রোজা শুরুর চার মাস আগেই কোম্পানিগুলো মিল পর্যায় থেকে তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। এ কারণে বাড়তি দামেও চাহিদামতো তেল পাচ্ছেন না খুচরা বিক্রেতারা। বাজার থেকে একরকম উধাও হয়ে যাচ্ছে সয়াবিন তেল। মাসের ব্যবধানে লিটারে ২০ টাকা বেড়ে খোলা সয়াবিন তেল খুচরা বাজারে ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভোক্তাদের আশঙ্কা, প্রতিবছরের মতো এবারও রমজানে বাড়তি দরেই কিনতে হবে ভোজ্যতেল। এ পণ্যটি নিয়ে অতীতে বারবার কারসাজি করা হয়েছে। কৃত্রিমভাবে সংকট তৈরি করে অসাধু ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী লাভবান হয়েছে। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে তেল মজুত করে পরে বাড়তি দামে সেগুলো বিক্রি করেছেন। বস্তুত বাজারে জোরালো মনিটরিং না থাকায় বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ী ও মজুতদাররা মনে করছেন, তারা যখন-তখন কোনো পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করবেন।

কয়েক বছর ধরে চিনি নিয়েও নানা কারসাজি করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তদারকি সংস্থার অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে অসাধু ব্যবসায়ীদের আঁতাত রয়েছে। এ কারণেই অসাধু ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী এতটা বেপরোয়া হওয়ার সাহস দেখাচ্ছে। দুঃখজনক হলো, নিত্যপণ্য নিয়ে বড় ধরনের কারসাজি করা হলেও অতীতে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করেও তা কার্যকর করা যায়নি। প্রশ্ন হলো, অতীতের মতো এবারও কি ছোলা, ভোজ্যতেল, চিনি, পেঁয়াজ, মসুর ডাল, খেজুর-এসব ইফতারি পণ্য বাড়তি দামে বিক্রি হবে? কয়েক বছর ধরে সাধারণ ভোক্তারা চড়া মূল্যস্ফীতির যন্ত্রণায় ভুগছেন। এর জন্য মূলত দায়ী ছিল বিগত সরকারের ভুল নীতি, অর্থ পাচার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে দেশ পরিচালনা ইত্যাদি। অন্তর্বর্তী সরকারে তিন মাস পূর্ণ হলেও দ্রব্যমূল্য কমেনি। জানা যায়, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ নিলেও এগুলো বাস্তবায়নে নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

কয়েক বছর ধরেই লক্ষ করা যাচ্ছে, অসাধু ব্যবসায়ীরা রমজান শুরুর কয়েক মাস আগে থেকেই ছোলা, ভোজ্যতেল, চিনি ইত্যাদি পণ্যের দাম বাড়ানো শুরু করে। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি রোধে অতীতে কর্তৃপক্ষ নানা আশ্বাস দিলেও বাস্তবে তাতে কোনো সুফল মেলেনি। অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামতো নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির করে তুলেছে। রমজানে কিছু পণ্যের চাহিদা বাড়ে, এটা অস্বাভাবিক নয়। সেজন্য আমদানিতে ছাড় দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও পণ্যের দাম ইচ্ছামতো বাড়ানো হয়। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে বাজার তদারকি জোরদার করা উচিত। কোনো স্বার্থান্বেষী মহল যাতে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে, সেজন্য কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে তৎপর হতে হবে। যেসব কারণে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির হয়, সেগুলো মোটামুটি চিহ্নিত। কী করণীয়, তাও বহুল আলোচিত। কাজেই যেভাবেই হোক, সেই কারণগুলো দূর করতে হবে। কর্তৃপক্ষ বাজারে অভিযান পরিচালনা করলেও ভোক্তা এর সুফল পান না। কাজেই আগে সরষের ভেতরের ভূত তাড়াতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম