Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

বিমানবন্দরের নিরাপত্তা-সংকট

দেশের ভাবমূর্তির প্রশ্নে কোনো ছাড় নয়

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বিমানবন্দরের নিরাপত্তা-সংকট

নানা ঘটনায় দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তার মান নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। রোববার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ, দায়িত্বরতদের অবহেলা এবং অনভিজ্ঞতার কারণে থমকে পড়েছে সেখানকার অপরাধী গ্রেফতার ও চোরাচালান পণ্য উদ্ধার কার্যক্রম। গত তিন মাসে এ সংক্রান্ত সাফল্য নেই বললেই চলে। বেড়েছে লাগেজ কাটা পার্টির তৎপরতা। আর এ অবস্থা তৈরি হয়েছে এভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্স (এভসেক) এবং এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) মুখোমুখি অবস্থানের কারণে। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গত ৫ আগস্ট বিগত সরকারের পতনের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিমানবন্দর থেকে তাদের কার্যক্রম অনেকটা গুটিয়ে নেয় এপিবিএন। এমন প্রেক্ষাপটে বিমানবাহিনী থেকে পাঁচ শতাধিক জনবল নিয়োজিত করা হয় বিমানবন্দরে। পরে ১১ আগস্ট এপিবিএন সদস্যরা দায়িত্ব পালন করতে গেলে বাধার মুখে পড়েন। গত ২৮ অক্টোবর গভীর রাতে অ্যাপ্রোন এলাকায় এপিবিএনের অফিসটি দখল করে এভসেক সদস্যরা।

জানা গেছে, এক সময় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রেটিং ছিল থার্ড ক্যাটাগরিতে। ওই সময় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। অবাধ চোরাকারবারসংক্রান্ত অভিযোগ ছিল। যাত্রী হয়রানি ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। পার্কিংয়ে ছিল না কোনো শৃঙ্খলা। পরিবহণ শ্রমিকদের দৌরাত্ম্যও ছিল চরমে। এমন পরিস্থিতিতে ২০১০ সালের ১ জুন বিমানবন্দরে নিরাপত্তার কাজ শুরু করে এপিবিএন। গত ৫ আগস্টের পর দুটি সরকারি সংস্থার বিরোধের কারণে এয়ারপোর্টের টার্মিনাল ভবন ও এয়ারসাইড অংশে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না এপিবিএনের ৬০০ সদস্য। গত তিন মাস ধরে তারা বসে বসেই বেতন নিচ্ছেন। অপরদিকে এপিবিএনের বিকল্প হিসাবে যাদের দিয়ে দায়িত্ব পালন করানো হচ্ছে, তাদের পেছনে গুনতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের ভাতা। সিভিল এভিয়েশন চেয়ারম্যান অবশ্য বলেছেন, নিরাপত্তাজনিত কোনো সমস্যা বিমানবন্দরে নেই। পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থা নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করছেন। অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু বিষয় ছাড়া কারও সঙ্গে কোনো ঝামেলাও হচ্ছে না।

বলার অপেক্ষা রাখে না, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এমন স্পর্শকাতর এলাকায় কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটাও গ্রহণযোগ্য নয়। এ ব্যাপারে নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বাহিনীকেই স্বীয় দায়িত্ব পালনে গুরুত্ব দিতে হবে। অন্যথায়, দেশে-বিদেশে নেতিবাচক বার্তা যাবে। ভুলে গেলে চলবে না, ইতঃপূর্বে বিমানবন্দরের অপ্রতুল নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও বহিরাগতের অবাধ প্রবেশের অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ থেকে কোনো পণ্য নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল অস্ট্রেলিয়াসহ আরও বেশকিছু বিদেশি এয়ারলাইন্স ও এয়ার ফ্রেইট। স্বাভাবিকভাবেই বিমানবন্দরের নিরাপত্তার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ের হওয়া উচিত। অন্যথায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। দায়িত্বে নিয়োজিত সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দিকটি বিশ্বময় সুখ্যাতি লাভ করবে, এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম