Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনর্বহাল

বিচার বিভাগের স্বনিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হলো

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনর্বহাল

বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ-সদস্যদের হাতে আনার সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ। আদালত ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল থাকবে বলেই জানিয়েছেন। অর্থাৎ সংবিধানের এ-সংক্রান্ত ৯৬ অনুচ্ছেদ পুরোটাই পুনর্বহাল করেছেন আপিল বিভাগ। ফলে এখন থেকে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে থাকবে। যুগান্তরের খবরে প্রকাশ, রোববার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। এ রায়ের ফলে দীর্ঘ আট বছর পর নিষ্পত্তি হলো গুরুত্বপূর্ণ এ রিভিউ আপিলের।

উল্লেখ্য, এর আগে বেশ কয়েকবার সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন কার্যতালিকায় এলেও শুনানি হয়নি। বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে রাখা হলেও ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা চালু হলে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছ থেকে সরিয়ে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির হাতে নেয়া হয়। পরবর্তীতে সংবিধানে পঞ্চম সংশোধনী এনে সে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে, প্রধান বিচারপতি ছিলেন এর প্রধান। তবে ২০১৪ সালে এ বিষয়ে আবার সংবিধানে সংশোধনী আনে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। তখন সংশোধনীতে বলা হয়, বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে থাকবে। সে সময় এর তীব্র বিরোধিতা করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও আইনজীবীদের একাধিক সংগঠন। এমনকি তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ তা বাতিলও করে দিয়েছিলেন।

বিধান অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি ও পরবর্তী জ্যেষ্ঠ দুজন বিচারপতিকে নিয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠিত হবে। কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে অসমর্থতা ও পেশাগত অসদাচরণের কোনো অভিযোগ উঠলে, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। বিচারপতিদের অপসারণের প্রয়োজন মনে করলে পুনর্বহালকৃত সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল তা করতে পারবে। গত রেজিমে বিচার বিভাগের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণের ব্যাপক অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি একজন প্রধান বিচারপতি সরকারের মনোরঞ্জন করেননি বলে তাকে দেশত্যাগ করতে হয়েছিল। যুগান্তকারী এ রায়ের মাধ্যমে বিচারব্যবস্থায় স্বনিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হলো। অতীতে বিচারপতিদের অপসারণে সংসদের ক্ষমতা থাকায় রাজনৈতিক প্রভাবের যে অভিযোগ ছিল, এ রায়ের মাধ্যমে তার অবসান ঘটবে। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে ন্যায়সংগতভাবে দায়িত্ব পালন করবে, এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম