Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

সাজার মেয়াদ শেষেও মিলছে না মুক্তি

জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যেতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সাজার মেয়াদ শেষেও মিলছে না মুক্তি

১৮ বছর বয়সে ভারতে গিয়ে নামের মিলে হত্যা মামলার আসামি হয়ে যান বাংলাদেশের বাদল ফরাজী। সেখানকার আদালতে তার যাবজ্জীবন সাজা হয়। নির্দোষ জানতে পেরে বাংলাদেশ সরকার বন্দিবিনিময় চুক্তির মাধ্যমে তাকে দেশে আনার পদক্ষেপ নেয়। বাদল ফরাজী এখন কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি। আদালতের দেওয়া সাজার মেয়াদ শেষের পর আরও দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো মুক্তি পাননি তিনি। ভিসা নিয়ে ২০০৮ সালে ভারতের উদ্দেশে রওয়ানা দেন বাদল। তার ভারত যাওয়ার আগেই দিল্লির অমর কলোনিতে এক বৃদ্ধা খুন হয়েছিলেন। খুনিদের একজনের নাম বাদল সিং। সেই বাদল সিংকে ধরতে ভারতীয় পুলিশ সীমান্তেও সতর্কতা জারি করে। বাদল ফরাজীকে পেয়ে বিএসএফ তাকে বাদল সিং মনে করে। ভাষাগত সমস্যার কারণে বাদল ফরাজী বিএসএফ সদস্যদের বোঝাতে ব্যর্থ হন তিনি অভিযুক্ত বাদল সিং নন। তাকে পাঠানো হয় কারাগারে। পরে ওই খুনের অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয় বাদলের বিরুদ্ধে।

২০১৫ সালের ৭ আগস্ট ওই হত্যা মামলায় বাদল ফরাজীকে দিল্লির এক আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। রায়ের বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে আপিল করা হলেও নিম্ন আদালতের রায় বহাল থাকে। রায়ের পর থেকে তিহার জেলে কেটেছে তার দিন। একদিন তিহার কারাগারে মানবাধিকার কর্মী রাহুল কাপুরের সঙ্গে কথা হয় বাদলের। সব শুনে রাহুল তাকে মুক্ত করার উদ্যোগ নেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বাদলের দণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে। এ নিয়ে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। রাহুল বাংলাদেশ হাইকমিশনে যোগাযোগ করলে হাইকমিশন বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি পাঠায়। এরপরই বাদলকে ছাড়াতে চিঠি চালাচালি শুরু হয় দুই দেশের মধ্যে। প্রায় ১০ বছর ভারতে কারাবাসের পর বন্দিবিনিময় চুক্তির মাধ্যমে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ পুলিশের একটি দল বাদল ফরাজীকে দিল্লি থেকে ঢাকায় এনে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখে। চুক্তি অনুযায়ী এক দেশের বন্দি আরেক দেশে সাজাপ্রাপ্ত হলে তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার পর সাজা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে রাখতে হয়।

বাদলের সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২২ সালের ২০ জুলাই। ওই বছরের আগস্টে বাদলের মুক্তির বিষয়ে ভারতীয় সরকারের অনুমোদনের জন্য চিঠি পাঠানো হয়। এরপর আরও দুবছর পেরিয়ে গেলেও তাকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে কোনো অনুমোদন আসেনি। ফলে বাদল ফরাজীকে আরও অতিরিক্ত কারাভোগ করতে হচ্ছে। পরে আরও কয়েকবার চিঠি পাঠানো হলেও উত্তর আসেনি। বন্দিবিনিময় চুক্তি অনুযায়ী ভারতের সংশ্লিষ্ট আদালতের অনুমতি ছাড়া তাকে মুক্তিও দেওয়া যাচ্ছে না। বস্তুত আইনগত জটিলতার কারণেই বাদলের মুক্তি মিলছে না। তার মুক্তির লক্ষ্যে সরকার জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা চালাবে, এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম