Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

বিশৃঙ্খল সড়ক ব্যবস্থাপনা

এ রোগের উপশম জরুরি

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বিশৃঙ্খল সড়ক ব্যবস্থাপনা

রাজধানীর সড়কের সার্বিক পরিস্থিতি খুবই খারাপ। শৃঙ্খলা বলতে কিছু নেই। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে নানাভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। মামলা হচ্ছে, জরিমানা করা হচ্ছে, চলছে ডাম্পিং, রেকারিং। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। সড়কের বর্তমান যে অবস্থা, তাতে যানবাহনের গতি নেমে এসেছে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারে। যানজট নিরসন, নগরীর সিগন্যালিং ব্যবস্থা সক্রিয়করণসহ বেশকিছু সমস্যা নিরসনে বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সভা হয়েছে। এ সভা থেকে কিছু নির্দেশনাও এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব নির্দেশনায় কোনো কাজ হবে না। তাদের মতে, সংকটের মূল জায়গা হলো বিআরটিএ। সংস্থাটির সংস্কারের কথা বলেছেন তারা।

স্মরণ করা যেতে পারে, গত সরকারের পতনের পর ট্রাফিক পুলিশ এক সপ্তাহের বেশি সময় সড়ক থেকে অনুপস্থিত ছিল। এ সুযোগে ওই সময় ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ হাজার হাজার অবৈধ যানবাহন সড়কে জায়গা করে নেয়। কিছুদিন ছাত্রসমাজ সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেছিল। বস্তুত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ট্রাফিক পুলিশ আইন প্রয়োগ শুরু করে। কিন্তু আইন ভাঙার প্রবণতা রোধ করা যায়নি। ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত সড়কে আইন অমান্য করার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে প্রায় ২৪ হাজার। সাড়ে ৯ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। কিন্তু এতসব সত্ত্বেও বিশৃঙ্খলার কোনো উন্নতি হয়নি। উদ্ভূত পরিস্থিতি আজ থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত ‘ট্রাফিক পক্ষ’ পালনের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। আমরা দেখার অপেক্ষায় রয়েছি এ সময়ে রাজধানীর ট্রাফিক পরিস্থিতির কতটা উন্নতি ঘটবে।

বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শামসুল হক বলেছেন, সড়কে ব্যক্তি মালিকানার পরিবহণ বেশি চলছে। তার মতে, নির্দিষ্ট কোম্পানিকে যদি রুট পারমিট দেওয়া হয় এবং উন্নত দেশগুলোর মতো কোনো পরিবহণে অনিয়ম পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তাহলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। আমরাও তা-ই মনে করি। কারণ সেক্ষেত্রে বিনিয়োগ ঝুঁকির ভয়ে কোম্পানিগুলো নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য হবে। দ্বিতীয়ত, বিআরটিএ’র সংস্কারের যে দাবি উঠেছে, সেই দাবিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। বিআরটিএ শুধু গাড়ির রেজিস্ট্রেশনই দেয় না, কোনো গাড়ি রেজিস্ট্রেশন ছাড়া চলবে কিনা, তা দেখার দায়িত্বও এ সংস্থার। আমাদের কথা হলো, নগরবাসী একটি সুশৃঙ্খল সড়ক ব্যবস্থাপনা দেখতে চায়। নাগরিকের শ্রমঘণ্টা নষ্ট করে যে ব্যবস্থা, জীবনের গতি রুদ্ধ করে যে ব্যবস্থা, মানুষের বিরক্তি উৎপাদন করে যে ব্যবস্থা, সেই ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা যাবে না। সড়কের শৃঙ্খলার ওপর নাগরিকের আরামদায়ক জীবন অনেকাংশে নির্ভর করে থাকে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম