সুষ্ঠু নির্বাচনে করণীয়
প্রয়োজন স্বাধীন ও কর্মক্ষম কমিশন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
নির্বাচনের সময় সব মন্ত্রণালয় ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতা দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বস্ত্র, পাট ও নৌপরিবহণ উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) আয়োজিত ‘নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কেমন চাই’বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওপর সরকারের হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। সরকারি চাকরি থেকে অবসরের পর কমপক্ষে তিন বছর না হলে কেউ যাতে দলীয় মনোনয়ন না পান, সেজন্যও বিধান রাখা উচিত। একইসঙ্গে নির্বাচনের সময় মন্ত্রণালয়গুলোর ওপর খবরদারির ক্ষমতা ইসিকে দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। নির্বাচন কমিশন যাদের নিয়োগ দেয়, তাদের ক্ষেত্রে ইসি যে রিপোর্ট দেয় সেটিই যেন চূড়ান্ত হয়, এ জবাবদিহি নিশ্চিতেও কাজ করতে হবে।
বলা বাহুল্য, সংস্কার কার্যসাধনের পর এ সরকার আগামীতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারবে, এমন প্রত্যাশা নিয়েই অপেক্ষায় আছে দেশবাসী। গণতন্ত্রের পথচলা নির্বিঘ্ন করতে এর বিকল্পও নেই। সেদিক থেকে নির্বাচন কমিশনার হিসাবে কাজের অভিজ্ঞতা থাকা ড. সাখাওয়াত হোসেনের এসব পরামর্শ যে গুরুত্বপূর্ণ, সন্দেহ নেই। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের সঙ্গে সংলাপে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন স্থগিত করে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন গঠনের পরামর্শ দিয়েছে। সংস্কার করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে আরও সম্পৃক্ত করার তাগিদও দিয়েছেন তারা। তবে এ পুরো প্রক্রিয়াতেই যাতে সাধারণ নাগরিকের ভোটের অধিকার নিশ্চিত হয়, সেদিকেই মূল ফোকাসটা রাখতে হবে বলে মনে করি আমরা। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থেই তা করা দরকার।
মনে রাখতে হবে, রাজনৈতিক দল সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করলে নির্বাচন কমিশন যেমন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না, তেমনি গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজসহ সব অংশীজনেরও সঠিক ভূমিকা পালনের বিকল্প নেই। ভুলে গেলে চলবে না, যে নির্বাচন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কার্যকর করে না, সেটা প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন নয়। দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও কর্মক্ষম করে গড়ে তুলে নির্বাচন আয়োজনের প্রক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার এগিয়ে যাবে, এটাই প্রত্যাশা।