হুমকির মুখে ট্রাভেল ব্যবসা
বন্ধ না করে নিবন্ধিত হওয়ার সুযোগ দিন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বিনা নোটিশে অনিবন্ধিত ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে সরকার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে দেশের ট্রাভেল ব্যবসা। জানা যায়, অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্ট অব বাংলাদেশের (আটাব) একটি চিঠির সূত্র ধরে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে দেশব্যাপী লাইসেন্সবিহীন অবৈধ ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কথা বলা হয়। এর ফলে সারা দেশের ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। উল্লেখ্য, দেশের ইউনিয়ন থেকে শুরু করে গ্রাম-মহল্লায় ছোট ছোট কম্পিউটার দোকানে লাখ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা চালাচ্ছেন। হঠাৎ করে এ ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে এই লাখ লাখ মানুষের আয়ের পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা এটি। কাজেই এ আয় বন্ধ হয়ে গেলে দেশের অর্থনীতিতে পড়বে এর বিরূপ প্রভাব। এ অবস্থায় এমন অভিযোগও রয়েছে যে, দেশে একটি অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরির জন্য সিন্ডিকেটের যোগসাজশে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন আশা করি।
আমরা মনে করি, সব ট্রাভেল এজেন্সিরই উচিত নিবন্ধনের আওতায় এসে ব্যবসা পরিচালনা করা। সেক্ষেত্রে অনিবন্ধিত ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার আগে তাদের সহজ প্রক্রিয়ায় নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া উচিত। জানা যায়, বর্তমানে লাইসেন্স নেওয়ার জন্য একজন ট্রাভেল এজেন্টকে কমপক্ষে ছয় মাসের ব্যবসা পরিচালনার অভিজ্ঞতা দেখাতে হয়। প্রশ্ন হলো, ব্যবসা বন্ধ করে দিলে তারা কীভাবে এ অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন? এই ছোট ব্যবসায়ীরা যাতে বড় ট্রাভেল ব্যবসায়ীদের স্বার্থের বলি না হন, সেদিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। ছোট ছোট ট্রাভেল ব্যবসার বদৌলতে গ্রাম ও মফস্বলের মানুষকে এখন বিদেশ যাওয়ার টিকিট কাটা, টিকিট বুকিংসহ ট্রাভেল ও ট্যুর সংক্রান্ত যাবতীয় কাজের জন্য ঢাকায় বা বড় শহরে আসতে হয় না। ঘরে বসেই কম্পিউটারের দোকান থেকে সব ধরনের ই-সেবা পান তারা। এই সুবিধাটা বন্ধ করে না দিয়ে এ ব্যবসাকে বৈধতা দেওয়াই হবে শুভবুদ্ধির পরিচায়ক। বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা বিবেচনায় নেবেন, এটাই কাম্য।