Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

নার্সদের কর্মবিরতি

হাসপাতালের কার্যক্রম বিঘ্নিত করা যাবে না

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নার্সদের কর্মবিরতি

কোনো সেবায় নিয়োজিত পেশাজীবীদের কর্মবিরতি সংশ্লিষ্ট সেবানির্ভর ব্যক্তি, বিশেষত চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তারপরও কিছুদিন পরপর বিভিন্ন দাবিতে হাসপাতালে কর্মবিরতির খবর পওয়া যায়। দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোয় নার্স ও মিডওয়াইফারিদের টানা ৪ ঘণ্টা কর্মবিরতিতে চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন সেবা নিতে আসা রোগীরা। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, মঙ্গলবার কর্মসূচি পালনকালে একাধিক হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, নার্সদের কেউ দায়িত্ব পালন করছেন না। তাদের টেবিলে লেখা ছিল ‘কর্মবিরতি’। রোগীর সেবা না করে তখন তারা ব্যস্ত ছিলেন কর্মসূচি পালনে। প্রশ্ন হলো, কর্মবিরতি ছাড়া দাবি জানানোর অন্য কোনো উপায় কি নেই? নার্স ও মিডওয়াইফারিদের দাবির যৌক্তিকতা থাকলেও তাদের কর্মবিরতি পালনকালে যেসব রোগী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের কী হবে? যেহেতু নার্স ও মিডওয়াইফারিরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকেন, সেহেতু তাদের এমন কোনো কর্মসূচি পালন করা উচিত নয় যাতে রোগীরা দুর্ভোগে পড়েন। হাসপাতালে আসা রোগীর স্বজনদের অভিযোগ -কর্মবিরতির কারণে কয়েক ঘণ্টা বহির্বিভাগের পাশাপাশি অস্ত্রোপচারসহ সব ধরনের সেবা কার্যক্রম ছিল বন্ধ। জানা যায়, ডাক্তাররা সময়মতো রুটিন রাউন্ড দিয়েছেন, প্রেসক্রিপশনও লিখে দিয়েছেন। কিন্তু নার্সদের কর্মবিরতির কারণে রোগীরা সেবাবঞ্চিত হয়েছেন। দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীর স্বজনরা কাক্সিক্ষত সেবা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে রাজধানীসহ সারা দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। শিশুসহ বহু মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। নার্সদের কর্মবিরতির কারণে এসব রোগীর দুর্ভোগ কতটা বেড়েছে, তা সহজেই অনুমেয়।

নার্স ও মিডওয়াইফারিদের দাবি -নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পরিচালক এবং বাং ল্লাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ও রেজিস্ট্রার পদ থেকে সব ক্যাডার কর্মকর্তাকে অপসারণ করে সেসব পদে অভিজ্ঞ নার্সদের পদায়ন করতে হবে। এদিকে মঙ্গলবার বিকালে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সঙ্গে বৈঠকের পর আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মবিরতির কর্মসূচি স্থগিত করেছে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদ। এর আগেও কর্মবিরতি পালন করেছে এ পরিষদ। পরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অভিজ্ঞ নার্সদের পদায়নের একদফা দাবি পূরণের আশ্বাসে কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়। কিন্তু সরকারের আশ্বাসের পরও দাবি মেনে না নেওয়ায় আবার মঙ্গল ও বুধবার ৪ ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় পরিষদ।

নার্স ও মিডওয়াইফারিরা তাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতেই পারেন। তবে দাবি আদায়ের নামে কর্মবিরতির মতো কর্মসূচি কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মসূচি চ ল্লাকালে বিপাকে পড়েন বিশেষত গরিব মানুষ। কারণ তারা অর্থের অভাবে ধনীদের মতো বেসরকারি হাসপাতালের সেবা নিতে পারেন না। কর্তৃপক্ষের উচিত নার্স ও মিডওয়াইফারিদের যৌক্তিক দাবিগুলো বিবেচনায় নেওয়া। একই সঙ্গে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও মিডওয়াইফারিদের যে কোনো ধরনের কর্মবিরতি থেকে বিরত থাকা উচিত।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম