Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

নির্বিচারে পাহাড় কাটা

অপরাধীদের বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ নিন

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নির্বিচারে পাহাড় কাটা

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পাহাড় কেটে উচ্চ দামে মাটি বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। বিষয়টি উদ্বেগজনক। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে একাধিক লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না।

শুধু হবিগঞ্জ নয়-চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাহাড় কাটার উৎসব চলছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও কেন পাহাড় কাটা থামছে না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। দেশের বিভিন্ন স্থানে পাহাড় দখল, পাহাড়ের পাদদেশে বসতি স্থাপন এবং পাহাড় কাটার জন্য মূলত দায়ী জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতারা।

অতীতে আমরা লক্ষ করেছি, পাহাড় দখল করা এবং পাহাড় কাটার কারণে পরিবেশ অধিদপ্তর যাদের জরিমানা করেছে, তাদের অনেকে আবারও একই অপকর্ম করেছে। নির্বিচারে পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন এবং বন-জঙ্গল ও গাছপালা উজাড় করার কারণেই চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে ঘনঘন পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। পরিণতিতে প্রতিবারই প্রাণ হারায় মানুষ। কিছু মানুষের অবিবেচনাপ্রসূত কর্মকাণ্ডের কারণে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটছে। প্রশ্ন হলো, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও পাহাড় কাটা থামছে না কেন?

উদ্বেগের বিষয়, গত কয়েক দশকে চট্টগ্রাম নগরীতে বহু পাহাড় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এসব পাহাড় কেটে আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম নগরীতে বর্তমানে যেসব পাহাড় টিকে রয়েছে, সেগুলোর অস্তিত্বও প্রায় বিপন্ন। পাহাড়ের উপরে, নিচে ও আশপাশে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে বস্তি। পাহাড় ও গাছপালা ধ্বংসের কারণে নানা প্রজাতির পশু-পাখি আজ বিলুপ্তির মুখে।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাহাড়, গাছপালা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। পাহাড় ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে নানা প্রজাতির গাছপালাও বিলীন হচ্ছে। এতে মানুষের জীবন বাঁচানোর সবচেয়ে অপরিহার্য উপাদান অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে এবং বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। মানবসৃষ্ট কারণে যাতে পাহাড়ধসের ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

২০০৭ সালে চট্টগ্রামের মর্মান্তিক ঘটনাটি বিবেচনায় নিলেই স্পষ্ট হয় পাহাড়ধস রোধে কেন জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। বস্তুত এ বিষয়ক সমস্যাগুলো চিহ্নিত। কী করণীয় তাও বহুল আলোচিত। পাহাড় কাটা রোধে অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত জোরালো পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম