বেঁধে দেওয়া দামও অকার্যকর
বাজারে কারসাজি বন্ধ করুন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে সম্প্রতি মুরগি ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তা এ দামে মিলছে না। এ দুই পণ্য নিয়ে সরকারি নির্দেশনা শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। ফলে এসব পণ্য কিনতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠছে। এর মূল কারণ ব্যবসায়ীদের কারসাজি। অতীতেও আমরা লক্ষ করেছি, নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশনা শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থেকেছে। কয়েকদিন আগে ভারতে পেঁয়াজ রপ্তানির শর্ত শিথিল করা হয়েছে। এর প্রভাবে বাজারে পেঁয়াজের দাম কমবে, এটাই ছিল ক্রেতাদের প্রত্যাশা। অথচ গত শুক্রবার রাজধানীর খুচরা বাজারে আমদানিকৃত পেঁয়াজের মূল্য নতুন করে বেড়েছে। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচামরিচসহ বেড়েছে কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম। ইলিশের ভরা মৌসুম চললেও দাম চড়া। বন্যার প্রভাবে দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হওয়া স্বাভাবিক হলেও সবজি একেক বাজারে একেক দামে বিক্রি হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ আগে চালের দাম বাড়ার পর আর কমেনি। স্বল্প ও সীমিত আয়ের মানুষের আয়ের বড় অংশ ব্যয় হয় খাদ্যপণ্য কেনা বাবদ। কাজেই ক্রেতাদের স্বস্তি দিতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কাজেই ব্যবসায়ীদের কারসাজি বন্ধ করতে কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চাঁদাবাজির ক্ষেত্রে কেবল হাতবদল হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আগের থেকেও বেশি চাঁদাবাজি হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে নিত্যপণ্যের বাজারে। সিন্ডিকেটের সদস্যরা যোগসাজশের মাধ্যমে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ সিন্ডিকেট ভাঙা জরুরি হয়ে পড়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো পণ্যের দাম বাড়াবে আর কর্তৃপক্ষ হাত গুটিয়ে বসে থাকবে, এটা চলতে পারে না। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আমরা সরকারের জোরালো ভূমিকা দেখতে চাই। মধ্যস্বত্বভোগীর কারসাজির কারণেও নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। বস্তুত বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণেই মধ্যস্বত্বভোগী ও অসাধু ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এ দুর্বলতা কাটাতে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। লক্ষ করা যায়, যখন অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়, তখন সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা আরও বৃদ্ধি পায়। বাজার তদারকি সংস্থার অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে অসাধু ব্যবসায়ীদের আঁতাতের বিষয়টিও বারবার আলোচনায় আসে। কাজেই শর্ষের ভেতরের ভূত তাড়ানোর জন্যও কর্তৃপক্ষকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে।