সড়কে নৈরাজ্য
নিয়ম মানতে বাধ্য করুন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
সড়কে নৈরাজ্যের বিষয়টি বহুল আলোচিত। বস্তুত রাজধানীসহ দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলোয় যানবাহন চলাচলে কোনো শৃঙ্খলা না থাকার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটে। রাজধানীসহ দেশের সড়ক-মহাসড়কে নতুন সমস্যা হিসাবে যুক্ত হয়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। বেপরোয়া গতির এ যানবাহনের কারণে সড়কে দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে। ৫ আগস্টের পর কয়েকদিন কর্মবিরতি পালন করেছে বাংলাদেশ পুলিশের অধস্তন কর্মচারী সংগঠন। এরপর সড়কে ট্রাফিক পুলিশ ফিরলেও তাদের কাজে গতি ফেরেনি। এ কারণে সড়কে নেই শৃঙ্খলার বালাই; যে যেভাবে পারছে, যানবাহন চালাচ্ছে। ব্যাটারিচালিত রিকশা উঠে এসেছে প্রধান সড়কে, চলছে ফ্লাইওভারের উপর দিয়েও। সম্প্রতি দিনে চলাচল নিষিদ্ধ ভারী যানবাহন চলতে শুরু করেছে সকালের দিকে। এদিকে চালকরা সড়ক আইন না মানার কারণে নগরীর যানজট পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা এখনো আগের মতো সক্রিয় হতে পারছেন না। কেউ সড়ক আইন না মানলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে তারা রীতিমতো হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের নেওয়া কিছু উদ্যোগের ফলে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দুঃখজনক হলো, তা এখন আর দেখা যায় না। এখন আগের মতোই রাজধানীতে সড়কের মাঝখানে যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানোর দৃশ্য চোখে পড়ছে। বিভিন্ন যানবাহনের ওভারটেক করার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে সর্বত্র। পথচারীদেরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পার হতে দেখা যায়।
বিশ্বের প্রায় সব বড় শহরেই স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা থাকলেও আমাদের দেশে খোদ রাজধানীর সিংহভাগ সিগন্যালই পুলিশের হাতের ইশারায় পরিচালিত হয় এখনো। রাজধানীতে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করার এটিও অন্যতম কারণ। দেশে সড়কে আইন মানার প্রবণতা নেই বললেই চলে। সড়কজুড়ে বিরাজ করছে চরম বিশৃঙ্খলা। পরিবহণ খাতে বিশৃঙ্খলার মূল কারণ সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের অদক্ষতা ও পেশাদারি মনোভাবের অভাব। সড়কে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে নীতিমালা প্রণয়নের কথা শোনা যায়। তবে শুধু নীতিমালা হলেই হবে না, তা বাস্তবায়নেও নিতে হবে যথাযথ পদক্ষেপ। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এবং শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনকেও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। পরিবহণ চালকদের অধিকাংশই অদক্ষ, প্রশিক্ষণহীন ও লাইসেন্সবিহীন। বহু যানবাহনের নেই ফিটনেস। অথচ যাত্রী পরিবহণে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত তারা। চাঁদাবাজিসহ পরিবহণ খাতের আরও অনেক সমস্যা বহুল আলোচিত। এসব সমস্যার সমাধান না হলে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পরও সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে কিনা সন্দেহ।