সড়ক অবরোধে জনদুর্ভোগ
এমন কর্মসূচি পরিহার করা উচিত
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
কারিগরি শিক্ষার্থীরা তাদের ছয় দফা দাবিতে সোমবার তেজগাঁও সাতরাস্তা এলাকায় বেশ কয়েক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ে রাজধানীবাসী। বলা যায়, স্থবির হয়ে পড়ে রাজধানী। যানজটের এ নগরীতে কোনো একটি রাস্তা বন্ধ হলেই এর প্রভাব পড়ে আশপাশের অন্যসব রাস্তায়। এক্ষেত্রেও হয়েছিল তা-ই।
তেজগাঁও, কাওরান বাজার, মগবাজার, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, শাহবাগ, গ্রীনরোড, মিরপুর রোড, কাকরাইল, শান্তিনগর, হাতিরঝিল, মৌচাক, রামপুরা, বাড্ডা, প্রগতি সরণিসহ বিভিন্ন সংযোগ সড়কেও ছড়িয়ে পড়েছিল এর প্রভাব। এসব সড়কে দীর্ঘস্থায়ী যানজট সৃষ্টি হয়; কোথাও কোথাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়েছিল যানবাহন। ফলে যাত্রীদের, বিশেষ করে বৃদ্ধ, নারী ও শিশুদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে যেসব রোগীকে জরুরি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল, তাদের।
জানা যায়, ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলনে’র ব্যানারে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন কারিগরি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। সন্ধ্যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সচিব আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা সড়ক ছেড়ে দেন।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন পেশাজীবী ও গোষ্ঠীকে তাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে এ ধরনের কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে। সেসব ক্ষেত্রেও যানজট সৃষ্টি হয়ে তা জনদুর্ভোগের কারণ হয়েছে। তাই আমরা মনে করি, সব পেশাজীবী ও গোষ্ঠীরই উচিত জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী যে কোনো কর্মসূচি পরিহার করা। বস্তুত কথায় কথায় সড়ক অবরোধের প্রবণতা থেকে সবারই সরে আসা উচিত। প্রত্যেকের অনুধাবন করা উচিত, এ প্রবণতা চলতে থাকলে আজ যারা অবরোধ করছেন তারাও অথবা তাদের অসুস্থ বা বৃদ্ধ স্বজনরাও কখনো এমন দুর্ভোগের শিকার হতে পারেন।
তাছাড়া দেশে একটি পরিবর্তন এসেছে। নতুন অন্তর্বর্তী সরকার কাজ শুরু করেছে মাত্র মাসখানেক আগে। তারা যাতে স্বস্তিতে কাজ করতে পারেন, সেদিক সবারই খেয়াল রাখা উচিত। কোনো পেশাজীবী বা গোষ্ঠীর কোনো দাবি-দাওয়া থাকলে তা লিখিত আকারে সরকারের কাছে পেশ করা যেতে পারে। কিন্তু যানজটের এ নগরীতে কর্মদিবসে কোনো সড়ক অবরোধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি আর নয়। আমরা আশা করব, এ ব্যাপারে সবার শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং সবাই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন।