Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

দ্বিতীয় মাস শুরু: অন্তর্বর্তী সরকারের সার্বিক সফলতাই কাম্য

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দ্বিতীয় মাস শুরু: অন্তর্বর্তী সরকারের সার্বিক সফলতাই কাম্য

নানামুখী চ্যালেঞ্জ, শঙ্কা-ষড়যন্ত্রের চাপ সামলে এক মাস পার করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিগত সরকার পতনের পর সৃষ্ট বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সামাল দিয়ে স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে নতুন বাংলাদেশ। ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরতে শুরু করেছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম মাসে প্রবাসীদের পাঠানো রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিশৃঙ্খলা কাটতে শুরু করেছে। সচল হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য। বৈদেশিক সম্পর্কে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। বিশ্বনেতাদের স্বীকৃতি, আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতার আশ্বাসে আস্থা ফিরছে জনমনে।

উল্লেখ্য, গৎবাঁধা চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে সৃজনশীল উপায়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। যেখানে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জনস্বার্থকে। ইতোমধ্যেই জাতির সামনে ভাষণ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে তিনি আগামীর রাষ্ট্র পরিচালনার রোডম্যাপ দিয়েছেন। বৈঠক করেছেন আওয়ামী লীগ ছাড়া দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে। তিনি আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়েও কথা বলেছেন। যদিও এক মাস কোনো মূল্যায়নের সময় নয়, তবে এ পর্যন্ত নেওয়া সরকারের প্রায় প্রতিটি উদ্যোগ যে সন্তোষজনক, তা বলাই বাহুল্য। সামনে আরও কাজ করতে হবে।

দায়িত্ব গ্রহণের এক মাসের মধ্যে দেশের ১২টি জেলায় বয়ে যাওয়া বন্যার মতো বড় দুর্যোগ সামাল দিয়েছে এ সরকার। সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা তিস্তা চুক্তির বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবেই তিনি ভারতের সঙ্গে কথা বলবেন। এ মাসেই তিনি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন। সেখানে বিষয়টি নিয়ে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছে। এদিকে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন ১৯৮ জন বিশ্বনেতা। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ ৯২ জন নোবেলজয়ী।

আমরা দেখছি, অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব নেওয়া সরকারকে শুরুতেই যথেষ্ট সময় ব্যয় করতে হচ্ছে বিগত সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের ক্ষোভ নিরসনের কাজে। যদিও কাজটি এত সহজ নয়, দেশ গঠনে অনেক পরিকল্পনাই রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের। এই এক মাসের মধ্যেই নতুন সরকার প্রশাসনের শীর্ষপদে ব্যাপক রদবদলের কাজে হাত দিয়েছে, যা এখনো চলমান। আর্থিক খাতের সংস্কারের অংশ হিসাবে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করা হয়েছে। এটা সুশাসনের ইঙ্গিত বহন করে। বিগত সরকারের আমলে আর্থিক খাতের কেলেঙ্কারি উদ্ঘাটন ও শ্বেতপত্র প্রকাশের লক্ষ্যে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া কিছু সৎ ও সাহসী মানুষ এ সরকারে যোগ দিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই এ সরকারের প্রতি জাতির প্রত্যাশা অনেক; কিন্তু মনে রাখতে হবে, তা পূরণে আমাদেরও দায়িত্ব এড়ানোর সুযোগ নেই। আমরা আশা করব, বৈষম্যবিরোধী যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ শুরু করেছে, তা পূরণে সমাজের সব স্তরের মানুষ স্বীয় ক্ষেত্র থেকে সহযোগিতা করবেন। এজন্য সবার আগে প্রয়োজন দেশাত্মবোধের। ভুলে গেলে চলবে না, একটি সুন্দর আগামীর জন্য যারা অকাতরে আত্মাহুতি দিয়েছেন, তাদের সেই স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব আমাদেরই।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম