Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

অভিজ্ঞতায় অভূতপূর্ব বন্যা

পুনর্বাসন প্রক্রিয়াও হতে হবে ব্যতিক্রমী

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অভিজ্ঞতায় অভূতপূর্ব বন্যা

আকস্মিক বন্যায় দেশের এগারো জেলায় কৃষক, মৎস্যচাষি ও খামারিসহ সাধারণ মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেকের ঘরবাড়ি ও বসবাসের নানা সরঞ্জাম তছনছ হয়ে গেছে। নদীভাঙনে বিলীন হয়েছে ভিটেমাটি। ভেসে গেছে ফসলের মাঠ, পুকুর, মাছের ঘের এবং হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশুর খামার। বাড়িঘর ও অর্থনৈতিক অবলম্বন হারিয়ে পথে বসেছেন অনেকে। জানা যায়, চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, সিলেট, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারে বন্যা পরিস্থিতি এখন মোটামুটি স্বাভাবিক। মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এছাড়া কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলেও জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। তবে এখনো ৬ লাখ ৯৬ হাজার ৯৯৫টি পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। এদিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ বলেছেন, আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজনের তিনবেলা খাবার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে রান্নার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু যারা নিজ বসতভিটায় আটকা পড়েছেন তারা বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের জন্য কষ্ট করছেন। জরুরি ভিত্তিতে পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারের পাশাপাশি তাদের জন্য বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। কুমিল্লার কিছু এলাকার বন্যা পরিস্থিতির ভিন্নমাত্রা রয়েছে। গোমতীর ভাঙনের কারণে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে কয়েকটি গ্রামের শত শত পরিবারের মানুষ। কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও এখনো গোমতীর বাঁধের ওপর শতাধিক পরিবার বসবাস করছে। যেহেতু আকস্মিক বন্যায় বিভিন্ন জেলার বিপুলসংখ্যক কৃষক তাদের সর্বস্ব হারিয়েছে, সেহেতু তাদের পুনর্বাসনে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের সহায়তার জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয় স্পেশাল ওএমএস কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এ সিদ্ধান্তের জন্য আমরা কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানাই। জানা যায়, সম্প্রতি চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ভয়াবহ বন্যায় ১৪ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে চাল ও আটা সরবরাহের লক্ষ্যে দুর্গত এলাকার পৌরসভা/ইউনিয়ন পর্যায়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের স্পেশাল ওএমএস কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। টানা তিন মাস এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকায় ধানের চারা, সবজির বীজ ও মাছের পোনা তৈরি করছেন শিক্ষার্থীরা। এ ধরনের কার্যক্রমও অব্যাহত রাখা দরকার। বন্যা-পরবর্তী পানিবাহিত রোগ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে। সহায়-সম্বলহারা মানুষ বলছেন, এখন ত্রাণের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সহায়তাও প্রয়োজন তাদের। তা না হলে তাদের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হবে। বস্তুত বন্যাদুর্গত এলাকার কৃষকসহ ক্ষুদ্র উদোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থাও করা দরকার। এবারের মতো বন্যা দেশের মানুষ অতীতে কখনো দেখেনি। কাজেই বন্যা-পরবর্তী পুনর্বাসন প্রক্রিয়াও হতে হবে ব্যতিক্রমী।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম