Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

রাজনৈতিক মতৈক্যে স্বস্তি

সংস্কারটাই জরুরি, নির্বাচন পরে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রাজনৈতিক মতৈক্যে স্বস্তি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি প্রশ্ন বারবার উচ্চারিত হচ্ছে। আর তা হলো, নির্বাচন কবে হবে। যদিও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গোড়া থেকেই বলে আসছে, রাষ্ট্র সংস্কারের পর সঠিক সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এমন প্রেক্ষাপটে শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নির্বাচন ও সংস্কার বিষয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা এএফএম খালিদ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, প্রয়োজনীয় সংস্কার করে ‘যৌক্তিক’ সময়ের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের নেতারা। তাদের মতামত ও প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দেশের সমস্যা সমাধানে প্রতিটি বিষয়ে ঐক্য গড়ে তোলার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন বলে আগত নেতারা জানিয়েছেন। অবশ্য বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মতামত ব্যক্ত করলেও নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে কোনো কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন নেতারা। এটা সত্য, জনগণের ভোটাধিকার প্রশ্নে নির্বাচন আয়োজনের বিকল্প নেই। তবে গণতন্ত্রকে সুসংহত না করে দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করলে তা কতটা জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে, এ প্রশ্ন থেকেই যাবে।

অবশ্য বৈঠকেও নেতারা বলেছেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের পর দেশটাকে নতুন করে সাজাতে ব্যর্থ হয়েছি। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পরও দেশ গঠনে ব্যর্থ হয়েছি; কিন্তু এবার ব্যর্থ হতে চাই না। শহিদদের বিনিময়ে আজ যে মুক্ত বাতাস, তা যাতে জনগণ উপভোগ করতে পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। আজ হোক কাল হোক জাতীয় নির্বাচন তো হতেই হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে এটা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্যও ভালো, রাজনৈতিক দলের জন্যও ভালো, দেশের জন্যও ভালো।

আমরাও মনে করি, সংস্কার করার আগে নির্বাচন কোনো অবস্থাতে বাঞ্ছনীয় নয়। তাই আগে সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। দেশের মধ্যে জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই সংস্কারের আগে নির্বাচন কোনো অবস্থাতে বাঞ্ছনীয় নয়। একটি সুন্দর ভবিষ্যতের স্বার্থেই জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর ধৈর্যধারণ প্রয়োজন। অবশ্য সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে জনগণ যাতে অন্ধকারে না থাকে, সেজন্য রূপরেখা জনসম্মুখে প্রকাশেরও দরকার আছে। সংবিধান নতুন করে লেখা সঠিক হবে, নাকি সংস্কার, সেটিও বিবেচনার দাবি রাখে। রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কারের প্রস্তাবের ভিত্তিতেই যে রূপরেখা প্রকাশ করা হবে, তা প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকেও জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বিবেচনায় নিয়েই কল্যাণমুখী প্রস্তাব দিতে হবে। দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে করতে হবে সর্বাÍক সহযোগিতা। রাষ্ট্র সংস্কারের মাধ্যমে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শতভাগ সফল হবে, এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম