বন্যা পরিস্থিতি: উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা জোরদার করুন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
ফেনী, কুমিল্লাসহ দেশের কয়েকটি জেলায় স্মরণকালের নজিরবিহীন বন্যায় বিপুলসংখ্যক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সারা দেশে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও এখনো গোমতীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বস্তুত কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এসব জেলায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
পানিবন্দি মানুষদের কেউ কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিতে পারলেও অনেকে নিজ বাড়িতেই আটকে রয়েছেন। সোমবার প্রবল পানির চাপে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে মুছাপুর স্লুইস গেট (রেগুলেটর) ধসে গেছে। কয়েকটি জেলায় বন্যার পানি ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে। তবে দুর্গত সব এলাকায়ই খাবার, বিশুদ্ধ পানি, স্যালাইন ও ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সড়ক ডুবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এবং নৌযানের অভাবে প্রত্যন্ত বহু অঞ্চলে ত্রাণ ও ওষুধ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।
যেহেতু বন্যাকবলিত প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুপেয় পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে, সেহেতু এসব অঞ্চলে জরুরিভিত্তিতে দৃষ্টি দেওয়া দরকার। আশার কথা, দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যাকবলিত মানুষের জন্য আয়োজিত গণত্রাণ কার্যক্রমে মানুষের ঢল নেমেছে। এটি ইতিবাচক হলেও নানা সমস্যার কারণে অনেক প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় কে কোথায় পানিবন্দি হয়ে রয়েছেন, তা জানা যাচ্ছে না। কাজেই যত দ্রুত সম্ভব পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাতে হবে।
ত্রাণ কার্যক্রম সুষ্ঠু হওয়ার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত ত্রাণের সুষ্ঠু বণ্টনে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এখন অনেক এলাকায় জনপ্রতিনিধিরা জনসমক্ষে আসছেন না। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বয়ের ক্ষেত্রে যাতে কোনো সমস্যা সৃষ্টি না হয়, কর্তৃপক্ষকে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। কোনো কোনো জায়গায় হাসপাতালের নিচতলায় কক্ষের ভেতরে বন্যার পানি ঢুকেছে। এতে বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ক্ষতি কাটিয়ে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করার পদক্ষেপ নিতে হবে। বন্যার পানি নামার পর যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয়, তা বহুল আলোচিত। কাজেই সেসব সমস্যার সমাধানে পর্যাপ্ত আগাম প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। পানিবাহিত রোগ, খাদ্য ঘাটতি-এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি মানুষের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।