Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

পুলিশ মোতায়েনের তাগিদ, সব থানার কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পুলিশ মোতায়েনের তাগিদ, সব থানার কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে হবে

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সারা দেশে থানাসহ পুলিশি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

এ পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর পুলিশের কনস্টেবল থেকে শুরু করে পদস্থ কর্মকর্তারা আত্মগোপনে চলে যান। ফলে গত কয়েকদিন দেশে পুলিশের কোনো উপস্থিতি ছিল না। এতে বিভিন্ন স্থানে এক ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। রাজধানীসহ সারা দেশে রাত নামলেই ডাকাত আতঙ্কে ভোগেন মানুষ। তাই রাতভর পাহারা দিচ্ছে ছাত্র-জনতা। ডাকাতির সংবাদ পেলে এলাকাবাসী ফোন করছেন সেনাবাহিনী ও বিজিবিকে। বর্তমানে পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তায় থানায় থানায় মোতায়েন করা হয়েছে সেনা ও আনসার সদস্য। এতে আতঙ্ক কাটতে শুরু করছে পুলিশ সদস্যদের।

বস্তুত গত কয়েকদিন নজিরবিহীন নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছিল পুরো দেশ। অবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে পুলিশের উচ্চপদস্থ কিছু পদে পরিবর্তন আনা হয়। মাঠপর্যায়ের সদস্যদের মধ্যে আস্থা ফেরাতে ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টারা বৃহস্পতিবার রাতে শপথগ্রহণ করেন। লক্ষ করা গেছে, এরপর থেকেই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। জানা যায়, শুক্রবার রাজধানীর ২৯টি থানার কার্যক্রম চালু হয়েছে। আরও জানা যায়, ১১০টি মেট্রোপলিটন থানার মধ্যে ৭০টি এবং রেঞ্জের ৫২৯টি থানার মধ্যে ২৯১টি-মোট ৩৬১ থানার কার্যক্রম চালু হয়েছে। থানাগুলোতে সেনা সদস্যরা থাকায় কর্মরতদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা কমেছে। তবে আতঙ্ক পুরোপুরি কাটেনি। শুক্রবারও রাজধানীর সড়কে ট্রাফিক পুলিশের কোনো সদস্য চোখে পড়েনি। শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের কারণেই সড়কে বিরাজ করছে সুশৃঙ্খল অবস্থা।

সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমন করতে গিয়ে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের কারণে পুলিশের ওপর বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে মানুষ। এক পর্যায়ে জনআক্রোশের শিকার হয়ে এ বাহিনীর বহু সদস্য হতাহত হন। থানা ও পুলিশের কাজে ব্যবহৃত যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। বহু জায়গায় অস্ত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ও নথি লুট হয়েছে। ফলে দেশে পুলিশি ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। বর্তমানে থানায় পুলিশ সদস্যদের কেউ কেউ সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন। সম্ভবত এর নেপথ্যেও কাজ করছে আতঙ্ক। সেই আতঙ্ক দূর করার সহজ উপায় হলো সেবা দিয়ে জনআস্থা অর্জন করা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের আচরণগত সমস্যার কারণেও মানুষের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ সবকিছুর বহিঃপ্রকাশ একসঙ্গে ঘটেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। সম্প্রতি পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের এক সভায় এ বাহিনীর একজন সদস্য বলেছেন, পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের খেয়ালখুশিমতো নির্দেশদানের কারণেই পুলিশের এ দশা হয়েছে। সভায় বক্তারা বলেছেন, তারা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে আগ্রহী। পুলিশ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারলে দ্রুত তারা মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবে। এ বাহিনীর সদস্যরা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারলে আশা করা যায়, আগামীতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। পুলিশকে জনবান্ধব বাহিনী হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে পুলিশ আইনেও সংস্কার করা দরকার।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম