ই-কমার্স ব্যবসা
ইন্টারনেটের স্বাভাবিক গতি কাম্য
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রায় দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর গতকাল বিকাল থেকে দেশে ফেসবুক চালু হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশে মেটার তিনটি প্ল্যাটফর্ম (ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ) এবং টিকটকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, আর কোনো বিধিনিষেধ নেই। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ শুরু হলে মোবাইল ইন্টারনেট এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। ৫ দিন পর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত পরিসরে ফেরে। কয়েকদিন আগে মোবাইল ইন্টারনেট চালু হলেও বন্ধ ছিল ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ই-কমার্স ও এফ-কমার্সনির্ভর ব্যবসায়।
বস্তুত কয়েকদিন আগে দেশে ইন্টারনেট চালু হলেও এর গতি এখনো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেনি। ব্যবহারকারীদের অভিযোগ-ইন্টারনেটের যে গতি, তাতে অনলাইনকেন্দ্রিক প্রায় সব ধরনের কাজই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যেহেতু দিন দিন মানুষের ইন্টারনেটনির্ভর কার্যক্রমের পরিধি বাড়ছে, সেহেতু এর স্বাভাবিক গতি নিশ্চিত করা দরকার। এখন লাখ লাখ তরুণ ফ্রিল্যান্সার হিসাবে দেশে বসে মূলত বিদেশি গ্রাহকদের কাজ করে আয় করেন ডলার। এ কাজের জন্য লাগে দক্ষতা, বিদ্যুৎ আর গতিশীল ইন্টারনেট সংযোগ। জানা যায়, ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ই-কমার্স ও ফেসবুকভিত্তিক (এফ-কমার্স) উদ্যোক্তারা। অনলাইনভিত্তিক ই-কমার্স ও এফ-কমার্স খাতের ব্যবসা ফেসবুকনির্ভর হওয়ায় বিপাকে পড়েছিলেন দেশের কয়েক লাখ উদ্যোক্তা। শুধু প্রথম ১০ দিনেই ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশে ইন্টারনেট তথা সোশ্যাল মিডিয়ানির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক বেড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ থাকায় শুধু নারী উদ্যোক্তারাই প্রতিদিন হারিয়েছেন ৬০ কোটি টাকার বাজার। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর আমদানি-রপ্তানিসহ দেশের সব খাতে অবর্ণনীয় ক্ষতি হয়েছে। দেশব্যাপী ইন্টারনেট সেবা দ্রুত স্বাভাবিক না হলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়তেই থাকবে। বিভিন্ন ধরনের সেবার সঙ্গে এর নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। কাজেই এর সেবায় যাতে বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশে সব ধরনের ডিজিটাল সেবা স্বাভাবিক রাখার পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমকে দায়বদ্ধতার অধীনে আনতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। কেউ ডিজিটাল প্রযুক্তির অপব্যবহার করলে কী করণীয়, তা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারণ করা এবং অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। তবে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া এর সঠিক সমাধান নয়।