ক্ষতিগ্রস্ত গার্মেন্ট খাত
সব পক্ষকে সুবিবেচনার পরিচয় দিতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে ডলার আয়ের প্রধান দুটি খাতের অন্যতম রপ্তানি, যার বড় অংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। রেমিট্যান্স খাতে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের যে কোনো সংকট মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্পে ২১ হাজার কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনার কারণে বিদেশি ক্রেতারা অর্ডার বাতিল করবেন না, এয়ার শিপমেন্টও চাইবেন না বলে আশ্বস্ত করেছেন। সোমবার রাজধানীতে বায়ার্স ফোরামের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান বিজিএমইএ সভাপতি।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেছেন, বিদেশি ক্রেতারা দীর্ঘদিন বাংলাদেশে ব্যবসা করছেন। বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তারা অবগত রয়েছেন। গত কয়েকদিন দেশে ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় তারা কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিলেন। নিরবচ্ছিন্ন ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন তারা। বিদেশি ক্রেতারা জানিয়েছেন, ৪-৫ দিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় যথাসময়ে পণ্য রপ্তানি করতে না পারলে অর্ডার বাতিল করবেন না; ডিসকাউন্ট চাইবেন না; এয়ার শিপমেন্টও চাইবেন না। এদিকে পোশাকশিল্প হরতাল-অবরোধের আওতামুক্ত রাখার আহ্বান জানিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি বলেছেন, বিগত দিনে পোশাকশিল্প হরতাল-অবরোধের আওতামুক্ত ছিল। তাই ভবিষ্যতেও যারা হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দেবেন, তারা পোশাকশিল্পকে এর আওতামুক্ত রাখবেন বলে আশা করি। তিনি আরও বলেছেন, দেশের ইমেজ নিয়ে বায়াররা চিন্তিত নন। জানা যায়, সোমবারের আলোচনায় তারা পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। উল্লেখ্য, দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং তৈরি পোশাক খাতে এর প্রভাব ও পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক পোশাক ক্রেতাদের জানাতে বাংলাদেশে অবস্থিত বিশ্বের নামিদামি পোশাক ক্রেতা ও তাদের এদেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। বৈঠকে বিজিএমইএ কারখানাগুলোর প্রতি সহানুভূতিশীল থাকার জন্য ক্রেতাদের আহ্বান জানিয়েছে।
রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাতকে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে, যা নিয়ে বহুদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। কাজেই এ খাতে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে সব পক্ষ ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে, এটাই প্রত্যাশা। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রভাব মোকাবিলায় যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া না হলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা সম্ভব কি না, এটাও এক প্রশ্ন। এছাড়া স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পর আমাদের নতুন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের যে কোনো সংকট মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে।