খুলেছে গার্মেন্ট কারখানা: নিরাপত্তা ও ইন্টারনেট সবচেয়ে জরুরি এখন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
এ দেশের অর্থনীতি যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ খুঁটির ওপর দাঁড়িয়ে আছে, সেগুলো হলো-কৃষি, রেমিট্যান্স ও গার্মেন্টশিল্প। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় দেশে যে ব্যাপক নাশকতা হয়েছে, এর ফলে এই তিন খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গার্মেন্ট খাত। দেশের গার্মেন্ট কারখানাগুলো বন্ধ ছিল এবং বিজিএমইএ’র এক হিসাবে এর ফলে প্রতিদিন ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার।
সারা দেশে ছোট-বড় আট শতাধিক গার্মেন্ট কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে রপ্তানিমুখী গার্মেন্ট কারখানার সংখ্যা ছয় শতাধিক। আন্দোলনকারীদের কমপ্লিট শাটডাউনের সময় গার্মেন্ট কারখানাগুলো উৎপাদনে যেতে পারেনি। উপরন্তু ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় ক্রেতাদের সঙ্গে ই-মেইলে যোগাযোগ করা যায়নি। সবটা মিলিয়ে বহির্বিশ্বের ক্রেতাদের সঙ্গে আস্থার একটা সংকট তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের গার্মেন্টশিল্পের যে একটি ভালো ভাবমূর্তি ছিল, সেটিরও কম ক্ষতি হয়নি। আর্থিক ক্ষতি ও আস্থার সংকট-এ দুই প্রতিকূলতায় গার্মেন্টশিল্প আবারও শক্ত পায়ে দাঁড়াতে না পারলে দেশের অর্থনীতি আরও বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে, সন্দেহ নেই।
আশার কথা, শান্তি-শৃঙ্খলা প্রায় নিয়ন্ত্রণে আসায় গার্মেন্ট কারখানাগুলো খুলেছে, তবে এ সম্পাদকীয় লেখা পর্যন্ত ইন্টারনেট সংযোগ পুরোপুরি পুনঃস্থাপিত না হওয়ায় বিপাকে রয়েছেন গার্মেন্টশিল্পের মালিকরা। তারা ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না এবং এটাকে সুযোগ হিসাবে নিয়েছে এই শিল্পের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো। এসব দেশের গার্মেন্টশিল্পের মালিকরা বাংলাদেশের গার্মেন্টশিল্প নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর খবর পাঠাচ্ছেন আন্তর্জাতিক ক্রেতা সমাজকে।
এ সংকট কাটিয়ে উঠতে হলে সরকারকে দুটি বড় দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রথমত, গার্মেন্ট কারখানাগুলোর জন্য ব্যবস্থা করতে হবে কড়া নিরাপত্তার। দ্বিতীয়ত, গার্মেন্টশিল্পের মালিকরা যাতে ক্রেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতে পারেন, সেজন্য ইন্টারনেট সংযোগ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে হবে। দ্বিতীয় কাজটি বেশি জরুরি। কারণ ক্রেতাদের সঙ্গে অনতিবিলম্বে যোগাযোগ করা না গেলে আন্তর্জাতিক রপ্তানি বাজার হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। ওদিকে গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকদেরও দিতে হবে নিরাপত্তা। তারা যাতে কারফিউয়ের সময়ও কারখানায় নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারেন, সে ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা আশা করব, বিজিএমইএ’র নেতৃবৃন্দ ও সরকারের মধ্যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ বজায় থাকবে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে কী করণীয়, তা ঠিক করা হবে।