নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতি
শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
সারা দেশে মাধ্যমিকে নতুন শিক্ষাক্রমে অর্ধবার্ষিক মূল্যায়ন শুরু হয়েছে। নতুন নিয়মে কয়েকজন শিক্ষার্থী নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এর ভিত্তিতে পরীক্ষার খাতায় লিখতে পারছে। পরীক্ষার হলে দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষার কিছু অংশের মূল্যায়ন করছেন; পরে উত্তরপত্রের ভিত্তিতে হবে বাকি মূল্যায়ন। এবার কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) তৈরি করা প্রশ্নের ভিত্তিতে হচ্ছে মূল্যায়ন কার্যক্রম। নতুন নিয়ম হওয়ায় এনসিটিবি থেকে মূল্যায়নে শিক্ষার্থী নির্দেশিকা বা প্রশ্ন তৈরি করে তা পরীক্ষার আগের দিন প্রতিষ্ঠানপ্রধানের কাছে অনলাইনে পাঠানো হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানপ্রধানরা প্রশ্নপত্র ডাউনলোডের পর তা ফটোকপি করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সরবরাহের ব্যবস্থা করছেন। এদিকে প্রথম দিনেই শিক্ষার্থী নির্দেশিকা বা প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষার আগের দিন মঙ্গলবার রাতে এবং বুধবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়ে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর এর সঙ্গে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের হুবহু মিলও পাওয়া গেছে। জানা যায়, কোনো কোনো শিক্ষার্থী উত্তরপত্র লিখে পরীক্ষার হলে তা নিয়ে যায়। তবে এটিকে ‘প্রশ্নফাঁস’ বলতে চান না এনসিটিবির দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান। তার মতে, শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন আগে পেলেও তাতে কোনো লাভ হবে না; শিক্ষার্থীকে নিজ বিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনুশীলনভিত্তিক কাজের মধ্য দিয়ে তার দক্ষতা প্রমাণ করতে হবে। তিনি জানিয়েছেন, আগামীতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
নতুন পদ্ধতির মূল্যায়ন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। কোনো কোনো শিক্ষার্থীর অভিযোগ, মানসম্মত হয়নি শ্রেণিভিত্তিক প্রশ্নপত্র। কোনো কোনো অভিভাবক মনে করেন, দলগত আলোচনাভিত্তিক লেখার চর্চা বছরব্যাপী চলমান থাকলেও পরীক্ষার হলে তা না হওয়াই শ্রেয়। এটি শিক্ষার্থীর মৌলিক চিন্তা প্রকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। দুই বছর ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ১ জুলাই জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতির চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। জানা যায়, দেরিতে অনুমোদন হওয়ায় নতুন এ পদ্ধতি অর্ধবার্ষিক মূল্যায়নে পুরোপুরি প্রয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না। এনসিটিবির প্রস্তুত করা খসড়া মূল্যায়ন পদ্ধতির মাধ্যমেই মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে, তাদের তেমনভাবে গড়ে তুলতে হবে। জ্ঞানের চর্চায় আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা যাতে অন্য দেশের শিক্ষার্থীর তুলনায় পিছিয়ে না পড়ে, এটিও নিশ্চিত করতে হবে।