রপ্তানি খাতে প্রণোদনা হ্রাস, বিকল্প হতে পারে নীতি সহায়তা
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ রয়েছে আমাদের; আর এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার লক্ষ্যে প্রস্তুতি হিসাবে রপ্তানি খাতে সর্বনিম্ন ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশে নামানো হয়েছে প্রণোদনা। প্রণোদনা হ্রাসের এ হার গতকাল থেকে কার্যকর হয়েছে এবং এর ফলে অনেক খাতের প্রণোদনা কমে গেছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, এ সিদ্ধান্ত কি অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক হয়েছে? কারণ, রপ্তানিকারকরা বলছেন, বৈশ্বিক ও দেশীয় অর্থনৈতিক মন্দায় প্রণোদনা অর্ধেক কমিয়ে দেওয়ায় রপ্তানি খাত বড় চালেঞ্জের মুখে পড়বে। এর ফল এমনও হতে পারে, রপ্তানি বাজার অন্য দেশে স্থানান্তরিত হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রোববার যে সার্কুলার জারি করা হয়েছে তাতে দেখা যায়, সরকার রপ্তানির ৪৩টি খাতে বিভিন্ন হারে প্রণোদনার হার কমিয়েছে। এর মধ্যে পোশাক খাতেই সবচেয়ে বেশি প্রণোদনা দেওয়া হতো; কিন্তু এ খাতে প্রণোদনা কমানো হয়েছে সবচেয়ে বেশি। বলা বাহুল্য, পোশাক খাতের রপ্তানির আয় আমাদের অর্থনীতিকে মজবুত করে রেখেছে।
বস্তুত কৃষি, পোশাক খাত ও রেমিট্যান্স-এই তিনের ওপর দাঁড়িয়ে আছে আমাদের অর্থনীতি। পোশাক খাতে প্রণোদনা অর্ধেক কমিয়ে দেওয়ার ফলে অর্থনীতি একটা ধাক্কা খেতে পারে বৈকি। স্মরণ করা যেতে পারে, গত ফেব্রুয়ারিতে পোশাক খাতে এক দফা প্রণোদনা কমানো হয়েছিল। এবার আরেক দফা কমানো কতটা যুক্তিযুক্ত হয়েছে, তা ভেবে দেখতে হবে।
এমনিতেই সুদের হার, জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে। এসব মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বৈশ্বিক মন্দা। সবটা মিলিয়ে যে প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পোশাক শিল্পে, তা কীভাবে মোকাবিলা করা যাবে, তা এক বড় প্রশ্ন।
রপ্তানিকারকরা ইতোমধ্যেই বলেছেন, প্রণোদনা কমানোর ক্ষতি বিভিন্ন নীতি সহায়তার মাধ্যমে পুষিয়ে দেওয়া সম্ভব। বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে তারা কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। আমাদেরও কথা, পোশাক রপ্তানি খাত যাতে হুমকির মুখে না পড়ে, সে দিকটায় বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। অন্যান্য খাতেও প্রণোদনা কমানোর ফলে খাতগুলো কী ধরনের সমস্যায় পড়বে, তা বিবেচনায় নিয়ে সেগুলোর ক্ষেত্রেও বিকল্প সহায়তার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। আর এ সবই করতে হবে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির স্বার্থে।