Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষ: আনন্দ যেন বিষাদে পরিণত না হয়

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষ: আনন্দ যেন বিষাদে পরিণত না হয়

পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের জন্য ইতোমধ্যে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন মানুষ। অন্যান্য বছরের মতো এবারও ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে কর্তৃপক্ষ বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষকে এবারও কোথাও কোথাও যানজটের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অবশ্য সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী দাবি করেছেন, এবার ঈদযাত্রায় সড়কে চাপ থাকলেও যানজট নেই। তার কথার প্রতিফলন ঘটাতে মহাসড়কে যাতে মানুষের দুর্ভোগ না বাড়ে, সেজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। তবে চালকদের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবের কারণেও অনেক ক্ষেত্রে ঈদযাত্রা নিরাপদ থাকছে না। কারণ ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দুর্ঘটনার সংখ্যাও বেড়েছে। এ বিষয়ে বাস মালিক ও সংস্থাগুলোকে চালকদের বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করতে হবে। এছাড়া ঈদ এলে বাড়তি লাভের আশায় মহাসড়কে ভাঙাচোরা গাড়িও নামানো হয়। এসব যানবাহনের কারণে মানুষের দুর্ভোগই শুধু বাড়ে না, সড়ক দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বাড়ে। কাজেই দুর্ঘটনা এড়াতে এ সময় চালকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিশেষ সতর্কতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। নয়তো ঈদের আনন্দ পরিণত হতে পারে বিষাদে। অর্থ ও সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য যে অনেক বেশি, তা যাত্রীদেরও অনুধাবন করতে হবে।

আমরা দেখেছি, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কোনো যানবাহন বিকল হলে অথবা মহাসড়কের পাশে হাটবাজার বসার কারণেও যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়া ঈদুল আজহায় পশু পরিবহণের কারণে সড়কে বাড়তি চাপ থাকে। পাশাপাশি মহাসড়কের পাশে পশুর হাট বসতে দেখা যায়। যদিও সরকার পশুর হাট যাতে সড়কে চলে না আসে, সে ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে। সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো দেশে যানজটের বড় স্পটগুলো চিহ্নিত করেছে। এসব স্পট ঈদের আগে ও পরে নিবিড় মনিটরিংয়ের আওতায় আনা জরুরি।

প্রতিবছর ঈদযাত্রায় রেলেও ঘরমুখো মানুষের বাঁধভাঙা ভিড় থাকে। কর্তৃপক্ষ যদিও আসনভিত্তিক টিকিট বিক্রি করে, কিন্তু অতীতে দেখা গেছে, ঈদের সময় কোনো কোনো স্টেশনে ট্রেন প্রবেশ করামাত্র বাঁধভাঙা স্রোতের মতো মানুষ দলে দলে ট্রেনের ছাদে উঠে পড়েছে। নৌপথে লঞ্চের ক্ষেত্রেও চিত্রটি একই। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণের কারণে লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে লঞ্চ। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষকে বিশেষ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। বিনা টিকিটের যাত্রী ঠেকাতেও নিতে হবে যথাযথ ব্যবস্থা। ট্রেন ও লঞ্চে শিডিউল বিপর্যয় যাতে না ঘটে, সে ব্যাপারেও উদ্যোগী হতে হবে।

ঈদ সামনে রেখে গণপরিবহণের ভাড়া বাড়ানো অযৌক্তিক হলেও ইতোমধ্যেই ঘরমুখো অনেকে এ ধরনের অভিযোগ তুলেছেন। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাড়তি ভাড়া আদায় করা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা এ কথার বাস্তবায়ন দেখতে চাই। আমরা মনে করি, ঈদযাত্রায় যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে নেওয়া পদক্ষেপগুলোর বাস্তবায়নে সারা দেশে স্থানীয় সরকারগুলোকে কাজে লাগানো দরকার। সবার সম্মিলিত চেষ্টার মাধ্যমেই ঈদযাত্রায় স্বস্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব। সড়ক, নৌপথ, রেলপথ, আকাশপথ-সব ক্ষেত্রেই ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক করতে কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবাই আন্তরিক হবে, এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম