ইরানি প্রেসিডেন্টের মর্মান্তিক মৃত্যু
আমরা গভীরভাবে শোকাহত
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২১ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রোববার মর্মান্তিক এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত হয়েছেন। জানা যায়, আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুদেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করে হেলিকপ্টারে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন তিনি। তার হেলিকপ্টারে সহযাত্রী ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতিসহ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।
প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিহতের ঘটনায় স্বভাবতই ইরানজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। দেশটির জনগণকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় ইরানের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর খবরে ইরানের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন বাংলাদেশ, ইরাক, ভারত, পাকিস্তান, রাশিয়া, ভেনিজুয়েলা, আর্মেনিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নেতারা।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার পর ইরানের মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক হয়েছে। এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি অন্তর্ঘাতমূলক হামলা, তা স্পষ্ট নয়। তেহরানের তরফ থেকে এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। তবে দেশটির সংবিধান অনুযায়ী পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে এবং নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে দেশটির সংবিধান অনুযায়ী সর্বোচ্চ নেতার অনুমোদনের মাধ্যমে ইরানের সপ্তম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ মোখবারের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের কথা।
প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুতে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। ইসরাইল-গাজা সংঘাতের এ সময়ে তেহরানের সঙ্গে তেলআবিবের চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি কোনদিকে মোড় নেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।
প্রেসিডেন্ট রাইসিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসাবে দেখা হতো। বলা হয়, তার শাসনামলেই ইরান পর্যাপ্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ হয়েছে, যার মাধ্যমে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা সম্ভব। তার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাও ছিল। ইরানের প্রেসিডেন্ট, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নরসহ হেলিকপ্টারে থাকা সব আরোহীর মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক ও সমবেদনা জানাচ্ছি। দেশটির শোকার্ত জনগণের প্রতি প্রকাশ করছি সংহতি ও একাত্মতা। নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করছি। আশা করি, দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে।