Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

নিত্যপণ্যের অসহনীয় দাম: সিন্ডিকেট দমন ও কার্যকর বাজার তদারকি জরুরি

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নিত্যপণ্যের অসহনীয় দাম: সিন্ডিকেট দমন ও কার্যকর বাজার তদারকি জরুরি

বাজারে নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে নিম্নবিত্ত তো বটেই, মধ্যবিত্ত শ্রেণিরও নাভিশ্বাস উঠছে। পরিতাপের বিষয়, যেসব পণ্যের উৎপাদন ও মজুত পর্যাপ্ত রয়েছে, খোঁড়া যুক্তি দেখিয়ে সেগুলোরও দাম আকাশচুম্বি করেছেন বিক্রেতারা। যেমন, উৎপাদন ও সরবরাহ ঠিক থাকলেও কারসাজি করে বাড়ানো হয়েছে আলুর দাম। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এক কেজি আলু কিনতে ক্রেতাকে ৫০-৫৫ টাকা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা এক মাস আগেও ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। পাশাপাশি অবৈধ মজুত করে অস্থির করা হয়েছে ডিমের বাজার। প্রতি ডজন ডিম কিনতে ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে ১৫০ টাকা, যা কয়েকদিন আগেও ১২০ টাকা ছিল। এছাড়া বাজারে কোনো সবজিই কেজিপ্রতি ৬০ টাকার নিচে মিলছে না। নতুন করে মোটা চালের দামও বাড়ানো হয়েছে কেজিতে ৫ টাকা। উচ্চমূল্যের কারণে মাছ-মাংসের কাছে তো যাওয়াই যায় না। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নিম্ন আয়ের মানুষকে এখন চাল, ডাল, আলু ও ডিম কিনতেই গলদঘর্ম হতে হচ্ছে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, তদারকির অভাবেই তেল, চিনি, আটা-ময়দা, ডিমের মতো নিত্যপণ্যের দামের এমন অবস্থা। বাজারে অধিকাংশ নিত্যপণ্যেরই যে পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে, সে তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আদতে কতিপয় ব্যবসায়ীর অবৈধ মজুত কৌশলের কারণে ভুগতে হচ্ছে ভোক্তাকে। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে যারা কারসাজি করছেন, এমন অসাধু মজুতদারদের চিহ্নিত ও শাস্তির আওতায় আনাই হবে বাজার নিয়ন্ত্রণের কার্যকর পথ। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অবশ্য বলছে, পণ্যের দাম সহনীয় করতে তদারকি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি কুরবানির ঈদ ঘিরে তা আরও জোরদার করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। যেমন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে কুরবানির ঈদ ঘিরে সব ধরনের মসলার দাম বেশ কিছুদিন ধরেই বাড়ানো হচ্ছে।

অপ্রিয় হলেও সত্য, বাজারে কোনো বিধিবদ্ধ নিয়মই কাজ করছে না এখন; বাজার চলছে মূলত কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের মর্জিমাফিক। বস্তুত সরকারের বেঁধে দেওয়া পণ্যমূল্যের কোনো তালিকার তোয়াক্কা না করেই বিক্রেতারা খেয়ালখুশিমতো দাম রাখছেন। কোনো কোনো পাইকারি ও খুচরা কাঁচাবাজারে তো মূল্য-তালিকাই খুঁজে পাওয়া যায় না। নিত্যপণ্যের মূল্য-তালিকা নিয়ে এমন হযবরল অবস্থা বিরাজ করলে অসাধু ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ নেবে, এটাই স্বাভাবিক।

পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ আয় অনুযায়ী সংসারের সব চাহিদা বাদ দিয়ে শুধু খাদ্যের জন্য বাজেট নির্ধারণ করেও সামাল দিতে পারছেন না। নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রে এ দুর্ভোগ অব্যাহত থাকলে এর অনিবার্য পরিণতি হিসাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ পুষ্টিহীনতার শিকার হবে। আমরা মনে করি, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমনভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে যাতে ভোক্তারা সরাসরি এর সুফল পায়। বাজার তদারকি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সিন্ডিকেটের সদস্যদের যোগসাজশের বিষয়টি বহুল আলোচিত। বিষয়টি খতিয়ে দেখে কোনো অনিয়ম পেলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করি আমরা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম