মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংকট
দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে এ সমস্যা দূর করতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রতিবছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ভালো ফল করেও ভালো মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে না পেরে বহু শিক্ষার্থী পড়ালেখায় উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে না পেরে অনেক শিক্ষার্থী হতাশ হয়ে পড়ে। এর প্রভাব পড়ে তাদের উচ্চমাধ্যমিকের ফলে, এমনকি উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও। যারা এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ভালো ফল অর্জন করেছে, ভালো মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়াটা তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, দেশে ভালোমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কম।
জানা যায়, দেশে মানসম্মত হিসাবে বিবেচিত কলেজের সংখ্যা দুই শতাধিক। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসন আছে ১ লাখের কাছাকাছি। ভর্তির ক্ষেত্রে এসব কলেজেই শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেশি। মেধাবী শিক্ষার্থীদের আগ্রহ থাকে রাজধানীর নামিদামি কলেজের প্রতি। ঢাকায় মানসম্পন্ন কলেজের সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০টির মতো। মূলত এ কলেজগুলোয়ই ভর্তিতে তীব্র প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। এবারও একই প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে।
এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৬ লাখ ৭২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৮২ হাজার ১৩২ শিক্ষার্থী পেয়েছে জিপিএ-৫। সারা দেশে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তিযোগ্য আসন ২৫ লাখের মতো। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে অনুমোদিত আসনের বিপরীতে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৫০ শতাংশের মতো শিক্ষার্থী পায়, সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সার্বিক কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখা দরকার।
আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় মানসম্মত গবেষণাগার, লাইব্রেরি, খেলার মাঠসহ পর্যাপ্ত শিক্ষা সরঞ্জামের সরবরাহ নিশ্চিত করা দরকার। পাশাপাশি সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ করা দরকার।
যেভাবেই হোক, দেশে মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়াতে হবে। শূন্য পাশ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কী করে প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মান বাড়ানো যায়, তা খতিয়ে দেখতে হবে। আমাদের দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যদি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পিছিয়ে থাকে, তাহলে এসব প্রতিষ্ঠানে যে মানের জনশক্তি তৈরি হবে, তা দিয়ে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কঠিন হবে। শিক্ষার লক্ষ্য অর্জনে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করতে হবে। একই সঙ্গে বিনিয়োগকৃত অর্থের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা ছাড়া এক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো কঠিন হতে পারে।