Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

হলমার্ক কেলেঙ্কারি মামলার রায়

উচ্চ আদালতেও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পাক

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

হলমার্ক কেলেঙ্কারি মামলার রায়

বহুল আলোচিত হলমার্ক ঋণ কেলেঙ্কারি মামলার রায় দিয়েছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১। সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের ঘটনায় করা এ মামলার রায়ে হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. তানভীর মাহমুদ এবং কোম্পানির চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী জেসমিন ইসলামসহ ৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ এবং ৫ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া সোনালী ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবিরসহ সাতজনকে ৫ থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালে ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে হলমার্ক গ্রুপের ২ হাজার ৬০০ কোটিরও বেশি টাকা আত্মসাতের এ ঘটনা দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ঘটনাটিকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আর্থিক কেলেঙ্কারি হিসাবে দেখা হয়ে থাকে। দেশের আর্থিক খাতে এ ধরনের ভয়াবহ জালিয়াতির ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সেজন্য এর যথাযথ বিচারের দাবি ছিল দেশব্যাপী। তাই বিচারের রায় বিলম্বে পাওয়া গেলেও এ রায়কে আমরা স্বাগত জানাই। বস্তুত এ কেলেঙ্কারি কতটা গুরুতর তা বোঝা যায় বিচারকের মন্তব্যে। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, ‘হলমার্ক ঋণ কেলেঙ্কারি দেশের ব্যাংকিং ইতিহাসে এক বিস্ময়কর ঘটনা। যে অপরাধীরা দেশের জনগণের আমানত, দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা, দেশের অর্থনীতিকে খেলা মনে করে, তাদের মৃত্যুদণ্ডের মতো সাজা হওয়া উচিত। কিন্তু যে আইনে মামলা হয়েছে, তাতে সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।’

জানা যায়, মঙ্গলবার রায় ঘোষণার পর মামলায় দণ্ডিত আসামি সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন সরকার আদালত থেকে পালিয়ে গেছেন। আদালত তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং সাত লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন। আদালত থেকে দণ্ডিত আসামির পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। তিনি জামিনে ছিলেন এবং রায় শুনতে আদালতে হাজির হয়েছিলেন। তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে ওকালতনামায় স্বাক্ষর করে হাজিরা দেন। কাজেই মামলার আসামি হিসাবে তার ওপর পুলিশের সতর্ক দৃষ্টি থাকা উচিত ছিল। তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা প্রয়োজন। এছাড়া মামলার অন্যতম আসামি সোনালী ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির পলাতক রয়েছেন। তাকেও গ্রেফতার করতে হবে। এ ঘটনায় আত্মসাৎকৃত অর্থ উদ্ধারেও পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এ বিপুল অঙ্কের টাকা, যা মূলত জনগণের আমানতের অংশ, তা আইন বা দুদক যার মাধ্যমেই হোক, উদ্ধার করতেই হবে। আমরা মনে করি, হলমার্ক গ্রুপকে অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ প্রদানে যারা সহায়তা করেছে, তাদেরও শাস্তি হওয়া দরকার। সোনালী ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জড়িত থাকার যে অভিযোগ রয়েছে, সে বিষয়েও তদন্ত হওয়া দরকার।

আমাদের মনে আছে, হলমার্ক কেলেঙ্কারির খবর প্রকাশিত হওয়ার পর এ ধরনের আরও তথ্য বেরিয়ে এসেছিল। প্রকাশ পেয়েছিল ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে এ ধরনের আরও অর্থ লোপাটের খবর। এ ধরনের জালিয়াতির কারণে দেশের ব্যাংক খাতে সৃষ্টি হয়েছে বড় ধরনের সংকট। কাজেই এ ধরনের সব কেলেঙ্কারির হোতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে দেশের আর্থিক খাতকে রক্ষা করতে হবে। আমরা আশা করি, উচ্চ আদালতেও এ মামলার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম