রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নবী হোসেন!: বাড়তি সতর্ক ব্যবস্থা নিতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নবী হোসেন দলবলসহ কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রবেশ করেছেন বলে যে তথ্য পাওয়া গেছে, তা ভালোভাবে খতিয়ে দেখা দরকার। জানা গেছে, তার প্রবেশের তথ্যে ক্যাম্প ও ক্যাম্পের বাইরের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ। উল্লেখ্য, নবী হোসেন ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদেরই একজন। পরে তিনি বিপুল পরিমাণ অস্ত্র এনে ক্যাম্পের ভেতর অপরাধ চক্র গড়ে তোলেন। জানা যায়, বালুখালী এলাকার চারটি ক্যাম্প নবী হোসেন বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। এ বাহিনী মাদক পাচার, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধে জড়িত। বাংলাদেশে নবীর বিরুদ্ধে পাঁচটি হত্যা মামলাসহ ১২টি মামলা রয়েছে। নবী হোসেনকে জীবিত বা মৃত ধরিয়ে দিতে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে ২০২২ সালের মার্চে পোস্টার সেঁটেছিল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এরপর নবী সীমান্ত অতিক্রম করে পালিয়ে যান এবং জঙ্গলের ভেতর থেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অপরাধ চক্র নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে খবর মেলে। কাজেই এখন তার ক্যাম্পে প্রত্যাবর্তনের তথ্যটি সত্য হয়ে থাকলে তা উদ্বেগজনক বৈকি!
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে প্রায়ই সহিংস ঘটনা ঘটছে। অতি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করেও গোলাগুলি-খুনোখুনির মতো ঘটনা ঘটছে। এমন তথ্যও রয়েছে যে, ক্যাম্প অশান্ত করার জন্য সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোকে ইতঃপূর্বে বিনামূল্যে কোটি কোটি টাকার ইয়াবা দিয়েছে মিয়ানমার, যাতে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী হিসাবে চিহ্নিত করে আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার মাধ্যমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন রোধ করা যায়। এছাড়া কক্সবাজার ও বান্দরবানের সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখা ও তোতার দ্বীয়া দ্বীপে জঙ্গি ঘাঁটি গড়ে ওঠার তথ্যও রয়েছে। বলা বাহুল্য, এ পরিস্থিতি দেশের জন্য মারাত্মক নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করেছে। কাজেই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের অত্যন্ত শক্ত হাতে দমন করা প্রয়োজন। বর্তমানে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী নবী হোসেন কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রবেশ করে থাকলে তাকে যেভাবেই হোক গ্রেফতার করতে হবে। পুলিশ জানিয়েছে, নবী হোসেন ও তার দলের লোকজনের সীমান্ত অতিক্রমের খবর তারা শুনেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাড়তি সতর্ক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এটাই কাম্য।