খাবারের প্যাকেটে ব্যবহৃত কালি: স্বাস্থ্যঝুঁকি দূর করতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আমরা প্রতিনিয়ত দোকান থেকে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য কিনে থাকি। এসব খাদ্যপণ্য নানা ধরনের প্যাকেটে বা মোড়কে আবৃত করে আমাদের হাতে দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা কখনো ভেবে দেখি না এসব প্যাকট বা মোড়ক কতটা স্বাস্থ্যসম্মত; এগুলো কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি বহন করছে কিনা। আমরা ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার; কিন্তু খাদ্যদ্রব্যের প্যাকেটের বিষয়ে সচেতন নই। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এ বিষয়টি আলোচনায় আসে। সেখানে খাবার প্যাকেজিংয়ে প্রিন্টিং কালি ব্যবহারের নির্দেশনা নিয়ে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের (বিএসটিআই) মান মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এছাড়া প্যাকেজিং সাপ্লাই চেইন, প্যাকেজিং উপাদানের নিরাপত্তা এবং ভোক্তার স্বাস্থ্য সুরক্ষা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। উদ্যোগটি প্রশংসনীয়।
তবে বিএসটিআইর কাজ মূলত সেবা ও পণ্যের গুণগতমান নিয়ন্ত্রণ করা এবং এ উদ্দেশ্যে পণ্যের মোড়কজাত ও বাজারজাত করার অনুমোদন দেওয়া। কিন্তু বাজারে যেসব প্যাকেটে বা মোড়কে পণ্য বিক্রি হচ্ছে সেসব কতটা স্বাস্থ্যসম্মত, তা দেখবে কে? আমাদের দেশে ভেজাল খাদ্য বিক্রি হয় দেদার, যা দেখার যেন কেউ নেই। সেক্ষেত্রে খাদ্যপণ্যের প্যাকেট তৈরির ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে কিনা অথবা তা বিএসটিআই’র অনুমোদনপ্রাপ্ত কিনা, সে বিষয়টি দেখবে কে? অবশ্যই সরকারি কর্তৃপক্ষকেই তা তদারক করতে হবে সার্বক্ষণিকভাবে। তবে সবচেয়ে বেশি যা জরুরি তা হলো জনসচেতনতা। দোকানপাট, রাস্তাঘাট বা হকারের কাছ থেকে কেনা খাবার যেসব প্যাকেট বা ঠোঙায় দেওয়া হয়, তা বেশিরভাগ সময়ই হয় মুদ্রিত কাগজে তৈরি। এসব কাগজ যে কালিতে মুদ্রিত হয়, তা যে স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক, সে বিষয়টি খুব কম মানুষই জানে, অথবা জানলেও তাতে গুরুত্ব দেয় না। কাজেই এ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। সেটা মূলত সরকারকেই করতে হবে। পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষায় সর্বত্র নিরাপদ খাদ্য প্যাকেজিং নিশ্চিত করতে হবে। সরকার এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে, এটাই কাম্য।