শাহ আমানতে অনিয়ম
দুর্নীতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ কাম্য
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দুর্নীতি নিয়ে এর আগে দৃষ্টিপাত করা হলেও কোনো পদক্ষেপ নিতে আমরা দেখিনি। বরং বিমানবন্দরটিতে দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। রোববার যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে স্টেকহোল্ডার দুই এয়ারলাইন্সসহ সাত সংস্থার ব্যাপক দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি (অ্যাভসেক), বেবিচক এস্টেট, বেবিচক ইএম, বেবিচক সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, আনসার, কাস্টমস এবং শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, এপিবিএন ও পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িয়েছেন নানা অপকর্মে। খোদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক প্রতিবেদনেই এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে দুর্নীতির পেছনে বেবিচকের ১০ কর্মকর্তার নামও উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজনকে বদলি করা হলেও বাকিরা রয়ে গেছেন বহাল তবিয়তে।
জানা যায়, বেবিচকসহ একাধিক সংস্থার কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী বিমানবন্দরের বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রীদের কাছ থেকে বকশিশের নামে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়, স্বর্ণ ও ইয়াবা চোরাচালান, হুন্ডি পাচার, বিভিন্ন শিল্পগ্রুপের কর্ণধার ও তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রটোকল দেওয়ার নামে অর্থ আদায়সহ নানারকম অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। এছাড়া বিমানবন্দর টার্মিনালের কোনো স্পেসের ইজারা নিতে বা নবায়ন করতে ঘুস আদায়, ইজারাপ্রাপ্তদের ও রেন্ট-এ-কার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোহারা আদায়, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আর্থিক সুবিধা গ্রহণের মতো অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। খোদ কাস্টমসের কতিপয় সদস্য অবৈধ স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িত রয়েছেন। রয়েছে অর্থের বিনিময়ে চোরাচালানকারীদের মালামাল বিমানবন্দর থেকে বিনা ট্যাক্সে বের করে দেওয়ার অভিযোগও। এছাড়া আছে এপিবিএন এবং পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ছিনতাই ও চাঁদাবাজির অভিযোগ। এমন সব লাগামহীন দুর্নীতির কারণে আন্তর্জাতিক চোরাচালানকারীদের কাছে স্বর্ণ পাচারের নিরাপদ পথে পরিণত হয়েছে শাহ আমানত বিমানবন্দর।
এ অবস্থায় বিমানবন্দরটির ব্যবস্থাপনায় ঢালাও পরিবর্তন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে আমরা মনে করি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিবেদনেও বেশকিছু সুপারিশ রয়েছে, যা পালন করলে পরিস্থিতির কিছুটা হলেও উন্নতি ঘটবে। পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, প্রতিবছরই বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রতিবেদন ও সুপারিশ পেশ করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না। এমনটি চলতে পারে না। ইতঃপূর্বেও কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর কারণে বেবিচকের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংস্থাটির ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে এবং দেশের নিরাপত্তার স্বার্থেই সরকারের উচ্চপর্যায়ের দৃষ্টি দেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।