টিকিট কালোবাজারি, চক্রের মূলোৎপাটন করতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ট্রেনের টিকিট নিয়ে যাত্রীদুর্ভোগ, কালোবাজারি-এসব বিষয় বহুল আলোচিত। একসময় মনে করা হতো, অনলাইন পদ্ধতি চালু হলে এসব সমস্যা থাকবে না। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ট্রেনের টিকিট নিয়ে যাত্রীদুর্ভোগের অবসান হচ্ছে না।
টিকিট কালোবাজারি ঠেকাতে নানা রকম উদ্যাগ নেওয়া হলেও কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকতা-কর্মচারীর কারণেই পরিস্থিতির কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হচ্ছে না। প্রতিদিন ট্রেনের শত শত টিকিট কালোবাজারিদের হাতে চলে যাওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক।
জানা যায়, এ অপকর্মে স্টেশন মাস্টার, কাউন্টারম্যান থেকে শুরু করে সহজ ডটকম ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যও জড়িত। বৃহস্পতিবার র্যাব-৩-এর একটি দল কমলাপুর থেকে টিকিট কালোবাজারি চক্রের মূলহোতাসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে। প্রায় সাড়ে ১২শ টিকিটসহ চক্রের ১৪ জনকে আটকের পর র্যাব জানিয়েছে, কালোবাজারি নিয়ন্ত্রণ করত মূলত দুই ব্যক্তি। গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের টিকিট, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়েছে। যেহেতু টিকিট কালোবাজারি সঙ্গে রেলের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সহজ ডটকম কর্মীরা জড়িত, সেহেতু বিষয়টির আরও গভীরে তদন্ত হওয়া দরকার। আরও জানা যায়, সংরক্ষণ করা জনসাধারণের এনআইডির তথ্য ব্যবহার করে টিকিট ক্রয় করা হতো। এনআইডির তথ্য ব্যবহার করে চক্রটি অন্য কোনো অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা করছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা দরকার। এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চলতে থাকলে রেল ভ্রমণে যাত্রীদের আগ্রহ কমতে পারে।
সম্প্রতি চালু হওয়া ঢাকা-কক্সবাজার রুটের সরাসরি ট্রেনের টিকিটের চাহিদা ক্রমবর্ধমান। এক্ষেত্রেও কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্যও বাড়ছে। জানা যায়, এ রুটের ট্রেনের টিকিটও অনলাইন বা কাউন্টারে বিক্রি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা শেষ হয়ে যায়। যাত্রীরা বাধ্য হয়ে কালোবাজারিদের কাছ থেকে কয়কগুণ বেশি দামে তা ক্রয় করে থাকেন। কালোবাজারি প্রতিরোধ ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে এক্ষেত্রে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর বিষয়টি ইতিবাচক। অপরাধ দমনে এ ধরনের জোরালো তৎপরতা অব্যাহত রাখা দরকার। এ অপকর্মের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা জড়িত, তাদের সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা দরকার। জানা যায়, চক্রের সদস্যরা ভ্রাম্যমাণ যাত্রী, রেলস্টেশনের কুলি, স্টেশনের আশপাশের এলাকার টোকাই, রিকশাচালক ও দিনমজুরদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে টিকিট সংগ্রহ করত। কাজেই অপরাধ দমনে মানুষকে সচেতন করার জন্যও পদক্ষেপ নিতে হবে।