Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা

আরও বাড়াতে হবে কৃষি উৎপাদন

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা

ফাইল ছবি

খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিতে রয়েছে দেশ। দেশের মোট জনসংখ্যার ২১ দশমিক ৯১ শতাংশ মানুষ মাঝারি ধরনের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপে উঠে এসেছে। রোববার বিবিএসের ‘ফুড সিকিউরিটি স্ট্যাটিসটিকস প্রজেক্ট-২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদনে শহরে ২০ দশমিক ৭৭ শতাংশ, গ্রামে ২৪ দশমিক ১২ শতাংশ এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

আর অতি নিরাপত্তাহীনতায় আছেন শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ মানুষ। অঞ্চলগতভাবে রংপুর বিভাগের মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় বেশি ভুগছেন। উদ্বেগের মাঝেও আশার কথা, দেশের মানুষের ক্যালোরি গ্রহণের হার বেড়েছে। আবার ৭৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ মানুষের খাদ্য নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তাই নেই। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অপুষ্টিতে থাকা ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে।

খাদ্য নিরাপত্তা নির্ধারণের তিনটি নিয়ামক হলো-খাদ্যের প্রাপ্যতা, খাদ্যপ্রাপ্তির ক্ষমতা এবং খাদ্যের পুষ্টিমান ও নিরাপত্তা। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট সৃষ্টির যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, তাতে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা যথাসম্ভব নিশ্চিতে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। এর অংশ হিসাবে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য আমদানি ত্বরান্বিত করতে হবে।

খাদ্য প্রাপ্তির ক্ষমতা বৃদ্ধিতে দেশে চাল ও অন্যান্য খাদ্যপণ্যের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে হবে। কৃষিজমি অকৃষি খাতে চলে যাওয়া যথাসম্ভব বন্ধ করতে হবে। কৃষিপণ্যের উৎপাদন বাড়াতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে এ খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। খাদ্যের পুষ্টিমান ও নিরাপত্তার দিকেও নজর দিতে হবে। বাজারে অনিরাপদ খাদ্য সরবরাহ বন্ধের পাশাপাশি নিু ও মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে ব্যবস্থা নিতে হবে। অসাধু সিন্ডিকেট যেন পণ্যের দাম অযৌক্তিক হারে বাড়াতে না পারে, সেদিকেও নজর দেওয়া জরুরি।

পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, খাদ্য নিরাপত্তা নির্ধারণে তৃতীয় নিয়ামক তথা পুষ্টিমানসম্পন্ন ও নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের অনেক নিচে। এর কারণ আর্থিক অসচ্ছলতা ও খাদ্যের ত্রুটিপূর্ণ জৈবিক ব্যবহার।

আমরা দেখেছি, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে আর্থিক অসমর্থতায় মধ্যবিত্ত শ্রেণিও আমিষজাতীয় খাদ্য কেনা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল। এতে পুষ্টিহীনতা বাড়ছে। আবার দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশের অধিকাংশ খাবার গ্রামে উৎপাদন হলেও সেখানকার মানুষের মধ্যেই খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা সবচেয়ে বেশি। এ অবস্থায় সরকার দেশব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে অধিকতর মনোযোগ দেবে, এটাই প্রত্যাশা।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম